বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি এ বিষয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর জারি করা একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে-  ডব্লিউএইচও-এর ‘কোভিড-১৯ মহামারির ভুল ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘জরুরিভাবে প্রয়োজন এমন সংস্কারে ব্যর্থতা’।

আরো পড়ুন:

ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৬০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে লিঙ্গ হিসেবে শুধু নারী-পুরুষকে স্বীকৃতি দেবেন ট্রাম্প

ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বের অনান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র এই সংস্থাকে বেশি অর্থ দেয়। চিনের জনসংখ্যা আমাদের থেকে অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও তারা মাত্রা ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছিল। আর আমরা ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছিলাম। এটা আমার কাছে একটু অন্যায্য মনে হয়েছিল।”

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদের শেষ বছরে এই মহামারিরর কারণে বিশ্বে স্বাস্থ্য সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল।

নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি চিঠি পাঠাচ্ছেন, যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি কয়েকশো মিলিয়ন ডলার তহবিল হারাতে চলেছে। ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে তিনি ডব্লিউএইচও’র ডিরেক্টর জেনারেলকে একটি চিঠি লিখে এক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। ট্রাম্প সেই সময় ডব্লিউএইচও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, কোভিড-১৯ এর বিস্তার সম্পর্কে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চিনকে সাহায্য করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

কিন্তু সেই বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প পরাজিত হন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন

নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।

সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।

১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।

সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।

ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।

ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান

ওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।

গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।

ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা
  • নিউইয়র্কের এত ইহুদি কেন জোহরান মামদানির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন
  • সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন
  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
  • ভোটের আগে মামদানি-কুমোর এগিয়ে থাকার লড়াই