বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন
Published: 21st, January 2025 GMT
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি এ বিষয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর জারি করা একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে- ডব্লিউএইচও-এর ‘কোভিড-১৯ মহামারির ভুল ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘জরুরিভাবে প্রয়োজন এমন সংস্কারে ব্যর্থতা’।
আরো পড়ুন:
ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৬০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে লিঙ্গ হিসেবে শুধু নারী-পুরুষকে স্বীকৃতি দেবেন ট্রাম্প
ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বের অনান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র এই সংস্থাকে বেশি অর্থ দেয়। চিনের জনসংখ্যা আমাদের থেকে অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও তারা মাত্রা ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছিল। আর আমরা ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছিলাম। এটা আমার কাছে একটু অন্যায্য মনে হয়েছিল।”
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদের শেষ বছরে এই মহামারিরর কারণে বিশ্বে স্বাস্থ্য সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল।
নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি চিঠি পাঠাচ্ছেন, যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি কয়েকশো মিলিয়ন ডলার তহবিল হারাতে চলেছে। ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে তিনি ডব্লিউএইচও’র ডিরেক্টর জেনারেলকে একটি চিঠি লিখে এক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। ট্রাম্প সেই সময় ডব্লিউএইচও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, কোভিড-১৯ এর বিস্তার সম্পর্কে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চিনকে সাহায্য করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কিন্তু সেই বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প পরাজিত হন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।
এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি।
২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।
ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’