নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে যুবদল নেতাকে চাঁদা না দেয়ায় এ.এন.জেড ((ANZ)) টেক্সটাইল মিলের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন ও বিএনপি নেতা গোলজার হোসেনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুবদল নেতা এমদাদুল হক দিপু।  

বুধবার(২২ জানুয়ারি) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও বিএনপি নেতা গোলজার হোসেন এ মিথ্যে চাঁদাবাজি মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি একজন ব্যবস্যায়ী। গত বছর আমি জমি ক্রয় করে উপজেলার জামপুরে একটি টেক্সটাইল মিলের নির্মাণ কাজ শুরু করি৷  কিন্তু ৫ আগষ্টের পর স্থানীয় কথিত যুবদল নেতা আশরাফ ভূইয়ার নেতৃত্বে দিপু ও মুসা ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। চাঁদা না দেয়ায় গত ১৫ জানুয়ারি আশরাফ ভূইয়ার নেতৃত্বে ১০০-২০০ সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্মাণাধীন কাজে বাঁধা দিয়ে ১ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। যার পরিপেক্ষিতে কোর্টে মামলা দায়ের করি। তারা আমার মালামাল লুট করে এখন তারাই আমার নামে মিথ্যে চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে। আমি প্রশাসনসহ বিএনপির কর্তৃপক্ষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।  

বিএনপি নেতা গোলজার হোসেন জানান, আমি কখনো এলাকায় কোনো খারাপ কাজে সম্পৃক্ত নই। আমার এলাকায় হওয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী  আনোয়ার হোসেন আমার কাছে এসে সহযোগিতা চায়। আমি তখন সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ ও তথ্যানুযায়ী সংবাদ প্রকাশ করে। এর পরে গত কাল যুবদল নেতা আশরাফ ভূইয়ার সহচোর উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি দিপু কোর্টে ৫০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে। আমি এ মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  

অভিযুক্ত উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ ভুইয়া বলেন,নির্মাণাধীন জায়গাটি আমার বন্ধু যুবদল নেতা দিপুর। আনোয়ার হোসেন জোড় করে দখল করে রেখেছে৷ আমাদের নামে মামলা দেয়ায় তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরাও মামলা দিয়েছি।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ