ঠাকুরগাঁওয়ে হেফাজতে ইসলামের জেলা কমিটি গঠন
Published: 22nd, January 2025 GMT
ঠাকুরগাঁওয়ে এমদাদুল হক শাহীকে সভাপতি ও মুফতি শরিফুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে হেফাজতে ইসলামের জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট প্রাথমিক কমিটি গঠন করে হেফাজতে ইসলাম।
সভাপতি এমদাদুল হক শাহী গোয়ালপাড়া কাওমি মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি শরিফুল ইসলাম বালিয়াডাঙ্গী জমিরিয়া মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা আব্দুল মুকিদ, অর্থ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও প্রচার সম্পাদক হয়েছেন ঈসমাইল বিন হায়দার।
কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার বিভিন্ন স্তরের নেতা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যা গরিষ্ঠ কণ্ঠ ভোটে নতুন কমিটি নেতা নির্বাচন করা হয়।
নবনির্বাচিত সভাপতি এমদাদুল হক শাহী বলেন, “হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ইসলামি সংগঠন। আমরা প্রতিটি রাজনৈতিক ইসলামি দলের সদস্য ও অরাজনৈতিক ইসলামি ব্যক্তিত্ব একসাথে হয়ে ইসলামের জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে এই নতুন কমিটি গঠন করেছি।”
আয়োজনে নবনির্বাচিত সভাপতি সহ বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/হিমেল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না বলে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে
নারীদের কাজ করতে দেওয়া হবে না, ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না- এ নিয়ে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা করেন।
শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষরা অপবাদ ছড়ায়, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের কাজ করতে দেবে না, ঘর থেকে বের হতে দেবে না। আমরা বোনদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই, নারীরা তাদের যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে কাজ করবে।”
আরো পড়ুন:
‘অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন’, জামায়াত আমিরের দুঃখ প্রকাশ
প্রতিহিংসার রাজনীতিতে শান্তি আসতে পারে না: জামায়াত আমির
“আজকে দেশে তাদের সম্মান, মর্যাদা, নিরাপত্তা নেই। আমরা ক্ষমতায় গেলে এই রাষ্ট্রে তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ইনশাল্লাহ”।
দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শ্রমজীবী। তাদের অধিকার উপেক্ষা করে কোনো সমাজ-দেশ এগিয়ে যেতে পারে না জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “এই কাঙ্ক্ষিত সমাজ ব্যবস্থা গড়তে হলে পারস্পরিক সম্মান-শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দিয়েই গড়তে হবে। নারী পুরুষ সবাই মিলে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে ও স্থিতিশীল গতিশীলতার জন্য, সাম্যের সমাজ গড়ার জন্য আমরা কাজ করব। এই চেষ্টা সেদিনই আমাদের থামবে, যখন ঘরে ঘরে সুখ শান্তি আসবে বলে।”
শফিকুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় যারা উদ্যোক্তা তারা বিভিন্ন ভাবে তাদের শ্রমিক সহকর্মী ও কর্মচারীদের উপযুক্ত মূল্যায়ন করেন না, শ্রমের মর্যাদা দেন না, কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেন না। আবার তারা যেমন শ্রমিকদের নির্যাতন করেন, তেমনি আবার তারা চাঁদাবাজদের হাতে নির্যাতিত হন। চাঁদাবাজরা নানারূপ নিয়ে হাজির হয়। চাঁদাবাজরা দিবস পালনের নামে এমনকি আজকের দিবসটি নিয়েও তারা হাজির হয়েছে। এই দ্বন্দ্ব কতদিন চলবে।”
“আমরা চাই মালিকপক্ষ এটা বুঝবে। শ্রমিক বাঁচলে আমার শিল্প বাঁচবে, শ্রমিকও বাঁচবে। শ্রমিক না বাঁচলে শিল্প বাঁচে না। আবার শ্রমিকদেরও বুঝতে হবে উদ্যোক্তা-মালিক-শিল্পপতিরা যদি বাঁচে তাহলে সে নিজেও বাঁচবে। কারণ কর্মস্থলই যদি ধ্বংস হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে দাবিটা উত্থাপন করব কার কাছে? সেজন্য শ্রমিকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
টেকসই শান্তির বাংলাদেশ গড়তে পরস্পরকে হাতে হাত রেখে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়ে সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “যেদিন মালিকরা শ্রমিকদের দরদ দিয়ে মন দিয়ে ভালোবাসা সম্মান দেবেন, তারা নিশ্চিত থাকতে পারেন, শ্রমিকরা ষোলআনা শক্তি উজাড় করে মালিকের পক্ষেই থাকবে। আবার শ্রমিক যদি মনে করে না, আমার মালিক আমাকে মানুষই মনে করে না, তাহলে সে আর দায়িত্ব নিয়ে কিছু করবে না। এক্ষেত্রে উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এজন্য শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কাজই হলো মালিক ও শ্রমিকের সমন্বয়ে দরদি ও পারস্পরিক সম্মানের সমাজ গড়তে চায়।”
“আমরা টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। মালিক-শ্রমিকদের সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই। কিন্তু এটা আল্লাহর আইন ছাড়া কোনো কিছু দিয়ে সম্ভব নয়। এটা দুনিয়াতে প্রমাণিত সত্য,” বলেন তিনি।
শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশা তুলে ধরে জামায়াত আমির বলেন, “শ্রমিকদের কোথাও কোথাও অথবা অধিকাংশ জায়গায় হয়তো আট ঘণ্টা কর্ম আছে। কিন্তু এজন্য তাদের হাতে যে ভাতা, বেতন তুলে দেওয়া হয় তা দিয়ে তার নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। বাধ্য হয়ে এক জায়গায় আট ঘণ্টা কাজ করে আরেক জায়গায় আরো কাজ করে। সে তো মানুষ। মেশিন না। তারও পরিবার আছে, পরিবারকে সময় দিতে হয়, মন, শরীর আছে। চাপ, ক্লান্তি আছে। কিন্তু তাদের জীবনটা হয়ে গেছে অমানবিক জীবন। আমরা এটার অবসান চাই। এটা তখনই ঘটবে যখন আমরা সত্যিকার অর্থে মানুষ হিসেবে আরেকজনকে সম্মান শ্রদ্ধা করব।”
নারীদের কারখানায় নামাজের ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে পুরুষের জন্য নামাজের ব্যবস্থা ছোট্ট করে হলেও রাখা হয়। কিন্তু মা-বোনদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয় না। মালিকের প্রতি অনুরোধ করে বলব, যারা নামাজ পড়তে চায় তাদের সে ব্যবস্থা করে দেবেন। তাদের ইবাদতে আপনারা অংশীদার হোন।”
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ