সম্পর্ক নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার
Published: 26th, January 2025 GMT
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, “বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) প্রায় ৪৫-৫০টির মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোকে পিপিপি (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব) বা ইজারার মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের দিতে চায় সরকার।”
ইতোমধ্যে গত ছয় মাসে তিনটি মিল হস্তান্তর হয়েছে, আরো কিছুর প্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের বলতে চাই–এখন সরকার কোনো সম্পর্কের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না, সিদ্ধান্ত নিবেন বিনিয়োগকারীর যোগ্যতা এবং প্রস্তাবের ভিত্তিতে। প্রতিষ্ঠানগুলোর রিসোর্স (সম্পদ) ব্যবহার করুন, নিজে ও দেশকে লাভবান করুন, অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে অবদান রাখুন।”
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিল লিজ (ইজারা) পদ্ধতিতে পরিচালনায় বিটিএমসি ও ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই: মাহফুজ
তরুণদের রাজনৈতিক দলকে স্বাগত: তারেক রহমান
শেখ বশিরউদ্দীন বিনিয়োগের জন্য ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বিটিএমসি ও বিজেএমসির মিলগুলোতে পরিপূর্ণ অবকাঠামো আছে। কিছুটা সংস্কার করে নিলেই দ্রুত এর উৎপাদন শুরু হবে, লাভ করার সুযোগ হবে। ওপেন টেন্ডারের (উন্মুক্ত দরপত্রের) মাধ্যমে সততা, নিষ্ঠা ও দ্রুততার সাথে কাজগুলো করা হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বিনিয়োগকারী খুঁজছে, ব্যবসায়ীরা সুযোগটা নিয়ে নিন।”
বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বিনিয়োগের আহ্বান করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, “কুড়িগ্রামের উপযোগী কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করলে জনসাধারণ উপকার পাবে। বন্ধ থাকা মিলগুলো পুনরায় চালুর জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।”
ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ বলেন, “কর্মসংস্থান বাড়াতে এবং জন ও পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তুলতে চাই-যেখানে কুড়িগ্রামবাসী উপকৃত হয়।”
এরপরে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান এবং ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত শিকদার, আরিফুর রহমান খান, মঈনুল ইসলাম, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, বিটিএমসির সাবেক চেয়ারম্যান ব্রি. জে (অব.) মো. জিয়াউল হক, বিজেএমএ সম্পাদক আব্দুল বারিকসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক