সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
Published: 19th, October 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ চারজনকে আটকের ঘটনার অন্যতম পলাতক আসামি সাজ্জাদ হোসেন (৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ অক্টোবর) গভীর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকায় এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সাজ্জাদ ওই এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। তার গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানো ওই অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চারজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাজ্জাদসহ চক্রের আরও কয়েকজন সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে জেলহাজতে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও পুলিশি তদন্তে পলাতক আসামী হিসেবে সাজ্জাদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এদিকে, সাজ্জাদের গ্রেপ্তারের খবরে মিজমিজি এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাজ্জাদ ও তার সংঘবদ্ধ চক্রটি এলাকায় নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। তারা এই সফল অভিযানের জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানান এবং এই ডাকাত দলের পলাতক অন্য সদস্যদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত সাজ্জাদের কোনো নির্দিষ্ট বা স্থায়ী পেশা নেই। সে একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে, এই দলটি সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার পলাতক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ নির্মূলে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ড ক ত র প রস ত ত স দ ধ রগঞ জ থ ন গ র প ত র কর ক আস ম এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা-১ আসনে জামায়াতের চমক, চূড়ান্ত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুলনা-১ আসনে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রাথমিক পর্যায়ে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে সংগঠনটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের এ কৌশলের মধ্যে দিয়ে আসনটিতে নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।
আরো পড়ুন:
‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’
লটারির মাধ্যমে ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল
এর আগে বুধবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াতের কার্যালয়ে জেলার কর্মী সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক।
জামায়াতের হয়ে প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষ্ণ নন্দীও। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে এবারই প্রথম অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এক মাস ধরে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ নন্দীর নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে অবশেষে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায়। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার ‘জামায়াতে ইসলাম সনাতনী‘র সভাপতি। এ উপজেলা ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় এক বছর ধরে গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় বিভিন্ন সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীর সক্রিয় উপস্থিতি দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াতের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব।”
এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “বুধবার জামায়াতের আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”
ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায় ও সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।”
আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এর আগে খুলনা-১ আসনে মাওলানা মো. আবু ইউসুফকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল জামায়াত।
কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “গত ১ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান খুলনায় এলে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। পরে আগের প্রার্থী মাওলানা ইউসুফকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে বলা হয়। মাওলানা ইউসুফও আমার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।”
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মঈনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে সবাই দাঁড়িপাল্লার হয়ে কাজ করবেন।”
সাবেক প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে। আমি কৃষ্ণ নন্দীর বিজয়ের জন্য সর্বাত্মক কাজ করব। তার পক্ষে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। যেহেতু আমাকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে, সেহেতু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যথাসম্ভব কাজ করব, ইনশাআল্লাহ।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক