প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণদের নিয়ে সাপ্লাই চেইন কেস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল সাপ্লাই চেইন এডুকেশন অ্যালায়েন্স (আইএসসিইএ)। এটি সাপ্লাই চেইন শিক্ষার আন্তর্জাতিক সংগঠন। এতে বিভিন্ন ব্যবসায়ের সাপ্লাই চেইন-সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান করতে হয়। সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ডিইউওবি ০১০১’। এই দলের সদস্যরা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের রাওজা হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের ফেরদৌস রহমান, ফাতিন ইশতিয়াক ও নাইমা জিয়া। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন কেস কম্পিটিশন অনলাইনভিত্তিক প্রতিযোগিতা। জাতীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক এ তিন পর্যায়ে হয়ে থাকে। গত মাসে শেষ হলো মূল পর্ব। বিশ্বের প্রায় ১৫ দেশের ৩০টি দল এতে অংশ নেয়। এ সবকটি দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। বিজয়ী হিসেবে শতভাগ বৃত্তিতে ১ হাজার ১০০ ডলার মূল্যের একটি কোর্স (সার্টিফায়েড সাপ্লাই চেইন অ্যানালিস্ট বা সিএসসিএ) করার সুযোগ ও ১ হাজার ডলার অর্থ পুরস্কার পান তারা। বিজয়ী দলের সদস্য নাইমা জিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ও জাতীয় পর্যায়ে অনেকবারই আমরা কেস কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করেছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কেস কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ এবারই প্রথম। গ্লোবাল রাউন্ডে পৌঁছানোর পর আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম যেন বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের জন্য বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারি। সে জায়গা থেকে আমরা অনেক খুশি।’ সাপ্লাই চেইন নিয়ে আরও পড়াশোনা করতে চান এ শিক্ষার্থীরা। এ সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছার কথা জানালেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সাফল্য শুধু দলের অধ্যবসায় এবং দক্ষতার ফল নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষার ক্ষেত্রেও একটি বড় অর্জন। তাদের এ জয় বৈশ্বিক মঞ্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিজয়ী দল DUOB-0101-কে প্রাইজমানি হিসেবে ১ হাজার মার্কিন ডলার এবং সম্মানজনক সনদ প্রদান করা হয়েছে। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫