পারিশ্রমিক না পাওয়ার কারণে গতকাল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচে অংশ নেননি দুর্বার রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা। ফলে পুরোপুরি দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে মাঠে নামে বিপিএলের নতুন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবুও শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ে তারা ২ রানের জয় তুলে নিয়েছে। ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ১১৯ রানের পুঁজি গড়ে রাজশাহী। জবাবে রংপুর ৪৯ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত হয়। শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩১ বলে অপরাজিত ৫২ রান করলেও দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হন।  

ম্যাচ শেষে রাজশাহীর দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেন রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল। তার মতে, রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটারদের চেয়ে দেশিরাই ভালো খেলেছেন।  

সংবাদ সম্মেলনে আশরাফুল বলেন, ‘ম্যাচের আগে শুনেছিলাম তাদের বিদেশিরা নাও খেলতে পারে। আমার কাছে মনে হয়েছে, তাদের দেশি ক্রিকেটাররাই বিদেশিদের চেয়ে ভালো খেলেছেন। এবারের বিপিএলে দলগুলোতে মানসম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটারের সংখ্যা তুলনামূলক কম।’  

রাজশাহীর ইনিংসে শেষদিকে সানজামুল ইসলামের ২৯ বলে ২৮ রানের ইনিংসকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন আশরাফুল। তবে রংপুরের বোলারদের পরিকল্পনার ঘাটতিও তিনি দায়ী করেন।  তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলাররা শেষদিকে যেখানে বল করা উচিত ছিল, সেখানে বল করতে পারেনি। বিশেষ করে রানা যদি ইয়র্কার বা ব্যাক অব লেন্থে বল করত, তাহলে অন্যকিছু হতে পারত। সানজামুল ভালো ব্যাটিং করেছেন এবং শেষদিকে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রান এনে দিয়েছেন।’  

রাজশাহীর বিপক্ষে মাঠে ফিরে সৌম্য সরকার ৮ রান করেই আউট হন। তবে আশরাফুল আত্মবিশ্বাসী যে তিনি দ্রুত ছন্দে ফিরবেন, ‘সৌম্য আমাদের মূল খেলোয়াড়। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে ও অসাধারণ খেলেছে। ফাইনাল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভালো পারফর্ম করেছে। ইনজুরি কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরেছে। আজকের উইকেট কঠিন ছিল। তবে ২ ম্যাচ বাকি আছে, আশা করি সৌম্য সেরা ফর্মে ফিরবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল আশর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ