১০ ঘণ্টায়ও নেভেনি সীতাকুণ্ডের আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট
Published: 27th, January 2025 GMT
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা জ্বালানি তেলের দোকান থেকে লাগা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে অন্তত ১৫ দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে কুমিরা, বায়েজিদ ও আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট।
তবে ১০ ঘণ্টার চেষ্টায়ও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আসেনি। সোমবার সকাল ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুনের ভয়াবহতা কমলেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার টিএনটি রোডের সামনে ওয়াজেদ মার্কেটের পাশে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন জ্বলতে দেখে তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় স্থানীয় লোকজন। মুহূর্তেই চারদিক ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এতে প্রায় ১৫টি দোকান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফার্নিচারের শো-রুম, স্টেশনারি, গার্মেন্টসের জুট, চা স্টল, জ্বালানি তেলের দোকান ও রড সিমেন্টের দোকান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের চার ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুই ইউনিট।
ওয়াজেদ মার্কেটের মালিক জহির বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দোকানে থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। এতে প্রায় ১৫টি দোকান পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে কুমিরা, বায়েজিদ ও আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসে পযায়ক্রমে ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সোমবার সকাল ১০টা পেরিয়ে গেলেও আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।