নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে সুমনা আক্তার তিথি (১৩) নামে এক কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন ওই কিশোরীর মা আসমা বেগম (৪০)।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার শেখেরচর-বাবুরহাট বাজার সংলগ্ন মোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হতাহত দুজন চায়ের দোকানি মোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী ও মেয়ে।

নিহতের স্বজনরা জানান, বাড়ির পাশে নিজের চায়ের দোকান বন্ধ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফেরেন মোফাজ্জল হোসেন। দ্বিতীয় তলার ঘরে ঢুকেই স্ত্রী ও সন্তানকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। এ সময় তার  চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূ আসমা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে মাধবদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এছাড়া তিথিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তার এক প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে অক্ষত অবস্থায় বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল বাড়িটি ও আশেপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.

আনোয়ার হোসেন, সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। 

এ ঘটনায় গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “ছোট বাড়িটির নীচতলায় কাপড়ের দোকানের গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করি। নিহত মেয়ে তিথি স্থানীয় মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। কে বা কারা কী কারণে আমার স্ত্রী-সন্তানকে ঘরে ঢুকে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে বুঝতে পারছি না।” 

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ হোসেন বলেন, “কি কারণে কে বা কারা এ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/হৃদয়/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ