Samakal:
2025-09-18@04:30:45 GMT

পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়া মাছ নেই জালে

Published: 30th, January 2025 GMT

পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়া মাছ নেই জালে

‘আমার ছয় সদস্যের পরিবার। পদ্মা নদীতে মাছ ধরে সংসার চলে। দুই সপ্তাহ ধরে নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়ার ফলে জালে আর আগের মতো মাছ পড়ছে না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করতেছি’ বলছিলেন জেলে বিল্লাল ফকির। তিনি ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গফুর মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা। 
জানা গেছে, চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা নদীতে দুটি বালুচরের মধ্যবর্তী নদীর মূল চ্যানেলে সারি সারি বাঁশ পুঁতে আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি চরের মধ্যবর্তী প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পুঁতে রাখা সারি সারি বাঁশের পানির নিচের অংশ জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বেড়ার বাঁধে কিছু দূর পরপর রাক্ষুসী জালের ফাঁদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। ওই ফাঁদে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আটকা পড়ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন ওই ফাঁদে কয়েক মণ করে জাটকা আটকা পড়ছে। 
উপজেলার বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের জেলে খোকা মণ্ডল বলেন, ‘এই শুকনা মৌসুমে পদ্মা নদীতে ইলিশ চলাচলের মূল স্রোত ধারায় বেড়ার বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পদ্মায় মাছের আকাল দেখা দেওয়ায় উপজেলার বেশির ভাগ জেলে পরিবারের আয়-উপার্জন কমে গেছে।’ 
জেলে আলামিন ফকির (৪০) জানান, এ বছর পদ্মায় বড় ইলিশ খুবই কম। অন্যদিকে প্রতিদিন ওই বেড়ার বাঁধে মণকে মণ জাটকা মারা পড়ছে। 
স্থানীয় কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়ার বাঁধ দেওয়ার কারণে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৭০০ জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নের পদ্মা পারের বিভিন্ন গ্রামের দুই শতাধিক জেলের উপার্জন একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। 
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, মাথাভাঙ্গা গ্রামের প্রায় অর্ধেক পদ্মাজুড়ে আড়াআড়ি বাঁশের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার পানির নিচের অংশে ঘন জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এভাবে নদীতে মাছ চলাচলের পথ বন্ধ করে কয়েক মিটার পর পর তৈরি করে রাখা হয়েছে জাটকা ও ইলিশ আটকের ফাঁদ। বাঁধ দেওয়ায় জড়িত জেলেরা দুই ঘণ্টা পর পর ফাঁদে আটকা পড়া জাটকা ও ইলিশ তুলে এনে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। 
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীতে বেড়ার বাঁধ দেওয়ার সঙ্গে হিটু মৃধাসহ এলাকার আরও দু-একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। খোঁজ করে বাঁধের অদূরেই হিটু মৃধাকে পাওয়া যায়। আলাপকালে তিনি জানান, অনেক টাকা খরচ করে পদ্মায় বাঁধ দিয়েছেন। মাত্র কয়েকদিন ধরে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, বাঁধে এখনও পর্যাপ্ত মাছ আসে নাই। এখন শুধু জেলেদের খাওয়া খরচ চলছে। 
বাঁধ এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ফকির (৩৫) জানালেন, দুই সপ্তাহ ধরে ওই বাঁধ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে দিনরাত জাটকা ও ইলিশ নিধন করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈদ হাসান বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীতে একটি আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। বাঁধটির এক অংশ নদীর চরভদ্রাসন উপজেলা এবং অপর অংশ সদরপুর উপজেলার জল সীমানায় পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর যৌথভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ফয়সল বিন করিমের ভাষ্য, পদ্মায় আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হলে শিগগিরই তা অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র পর ব র পদ ম য়

এছাড়াও পড়ুন:

১০ টাকায় ইলিশ খাওয়াতে গিয়ে তোপের মুখে ‘এমপি প্রার্থী’ জামিল

ফরিদপুরের সদরপুরে ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন মাওলানা রায়হান জামিল (৩৬) নামের এক স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী। তবে, ইলিশের চেয়ে মানুষ বেশি হওয়ায় উপস্থিত জনতার মধ্যে শুরু হয় হট্টগোল। একপর্যায়ে জনতার তোপের মুখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রায়হান জামিল। প্রায় এক সপ্তাহ আগে মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়ে পোস্টার সাঁটিয়াছিলেন তিনি।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইলিশ বিতরণের কথা ছিল। তবে, সকাল থেকে শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমাতে শুরু করেন।

রায়হান জামিল প্রায় ৬০০টি ইলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু, মাছ নেওয়ার জন্য সেখানে দুই সহস্রাধিক মানুষ আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। বিতরণ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই মাছ ফুরিয়ে যায়। মাছ না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন লাইনে দাঁড়ানো লোকজন।

তারা বলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করেও মাছ পাননি। উল্টো ধাক্কাধাক্কি ও মারামারি লেগে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রায়হান জামিলকে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে হয়।

এ বিষয়ে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, ‘‘রায়হান জামিলকে আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়ে ছিল। কিন্তু, তিনি তা শোনেননি। বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’’

রায়হান জামিল ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার এমপিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর রায়হান জামিল বলেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে দামি মাছ ইলিশ। অনেক মানুষের ইলিশ কিনে খাওয়ার সক্ষমতা নেই। এই চিন্তা থেকে আমি প্রায় ৬০০ মানুষের মধ্যে ১০ টাকায় ইলিশ দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, হাজার হাজার মানুষ জড়ো হওয়ায় সবাইকে মাছ দিতে পারিনি। পরে আমি এ ঘটনার জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসি।’’

ঢাকা/তামিম/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১০ টাকায় ইলিশ খাওয়াতে গিয়ে তোপের মুখে ‘এমপি প্রার্থী’ জামিল