ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘‘১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলেও বিগত সরকারের আমলে স্বাধীন দেশে আমরা ছিলাম পরাধীন। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পর আশা করেছিলাম, দেশ সঠিক পথে এগোবে। কিন্তু, আজকের বাস্তবতায় সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ দফা দাবির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেছি। ৩১টি দল ঐক্যমত্য কমিশনে অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে, ২৫টি দল পিআরের পক্ষে মত দিয়েছে এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দাবি করেছেন। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে ঐক্যমত হওয়া ৮৪টি বিষয়ে তালবাহানা না করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।’’

সোমবার (২০ অক্টোবর) নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ চত্বরে ইসলামী আন্দোলন নোয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে কেউ (শেখ হাসিনা) সরকার গঠন করে। তারপর সংবিধানকে নিজেদের খেলার মাঠ বানায়। এটা চলতে পারে না। ৪০ শতাংশ ভোটের সরকার হলে বাকি ৬০ শতাংশ ভোটের মূল্য কোথায়?’’

তিনি বলেন, ‘‘আগামীতে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ, খুনি ও জুলুমবাজদের ক্ষমতায় নেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ নিজেদের দেশের মালিক আর জনগণকে তাদের দাস মনে করত। তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই গুম, খুন করেছে। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে আছে জানিয়ে জনগণকে মিথ্যে গল্প শুনিয়েছে। অথচ দেশের কোনো ব্যাংকে টাকা নেই। সব টাকা তারা পাচার করেছে। বৈদেশিক ঋণের চাপে দেশের অগ্রযাত্রা থমকে যাচ্ছে।’’

ঢাকা/সুজন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সর্বহারার মুক্তিসংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর

বদরুদ্দীন উমর সমগ্র জীবন সর্বহারা শ্রমিক-কৃষকদের মুক্তিসংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। কমরেড লেলিনের উত্তরসূরি হিসেবে জনগণকে সংগঠিত করে পার্টি ও সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। দেশীয় ও বৈশ্বিক রাজনীতির গতিধারা, প্রবণতা বিশ্লেষণ করে জনতার মুক্তিসংগ্রামের পথনির্দেশনা দিয়েছিলেন।

আজ শনিবার পাবনা প্রেসক্লাবে লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের স্মরণসভায় এভাবে বদরুদ্দীন উমরের জীবন ও কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন তাঁর সহযোদ্ধারা।

সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, বদরুদ্দীন উমরের জীবন ও কর্ম বিশ্লেষণ করতে গেলে তাঁর সময় ও ভূমিকাকে বুঝতে হবে। তিনি সারা জীবন সর্বহারা শ্রেণির মুক্তিসংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

কমরেড লেনিনের যোগ্য অনুসারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন উল্লেখ করে ফয়জুল হাকিম বলেন, উমর শ্রমিক-কৃষক ও জাতিসত্তার জনগণকে সংগঠিত করেছেন, পার্টি ও সংগঠন গড়ে তুলেছেন এবং দেশীয়-আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংগ্রামের পথ দেখিয়েছেন। বিপ্লবী তত্ত্ব নির্মাণে তাঁর লেখা অসংখ্য গ্রন্থ আজও প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের দক্ষিণাঞ্চলের সভাপতি সজীব রায় বলেন, বদরুদ্দীন উমর সাহসের সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে, শ্রমিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছেন তিনি।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের উত্তরাঞ্চলের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, উমর ছিলেন চিন্তাবিদ ও সংগঠক—একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা আসবে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই। তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে তখনই, যখন আমরা সংগঠন গড়ে তুলে বিপ্লবী গণ–অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।

পাবনার শাহজাদপুর অঞ্চলের সংগঠক রাসেদুল হক রাসু উমরের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে এক দফার আন্দোলনের আহ্বান প্রথম তুলেছিলেন বদরুদ্দীন উমর। তাঁর ভাষায়, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে বিদায় করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন উমর।

অন্যদের মধ্যে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক ও গ্রামীণ মজুর ফেডারেশনের পাবনা অঞ্চলের সংগঠক আমজাদ হোসেন, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক আবদুস শাকুর, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের পাবনা জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন বিশ্বাস এবং জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল পাবনা অঞ্চলের সংগঠক ফারুক আহমেদ। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল উত্তর অঞ্চলের সভাপতি মজিবর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সর্বহারার মুক্তিসংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর