বন্দরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পিন্টু (৩৩) নামে এক যুবককে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদম ভাবে কুপিয়ে অটোগাড়ি ক্রয়ের নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে  স্থানীয় সন্ত্রাসী বাতেন ও শাহাদাতগং এর বিরুদ্ধে। 

স্থানীয়রা আহতকে উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক  নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় আহত পিন্টু মিয়া বাদী হয়ে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি)  দুপুরে হামলাকারি বাতেন, শাহাদাত, আব্দুল মতিন ও রিপনের নাম উল্লেখ্য করে ও আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারী)  রাত ১০টায় বন্দর থানার ২১ নং ওয়ার্ডের বাবুপাড়ামোড়ে এ ঘটনাটি ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার ২০৯ নং সালেহনগর এলাকার বাসেদ মিয়ার ছেলে পিন্টু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অটোগাড়ী চালিয়ে জীবন যাপন করে আসছে। গত বুধবার  অটো চালক পিন্টু মিয়া তার ব্যবহৃত অটোগাড়ীটি অন্যত্র জায়গায়  বিক্রি করে ভালো একটি অটোগাড়ী ক্রয় করার প্রস্তুতি নেয়। 

এর ধারাবাহিকতা গত বৃহস্পতিবার রাতে অটো চালক পিন্টু মিয়া নতুন গাড়ী ক্রয় করার জন্য নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে বন্দর বাবুপাড়ামোড়ে আসলে ওই সময় উৎপেতে থাকা বন্দর থানার সালেহনগর এলাকার আব্দুল মতিন মিয়ার সন্ত্রাসী ছেলে বাতেন, বন্দর রুপালী আবাসিক এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে শাহাদাত, সালেহনগর এলাকার আব্দুল মতিন ও বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার রিপনসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায়।

ওই সময় হামলাকারিরা অটো চালক পিন্টুকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদম ভাবে কুপিয়ে উল্লেখিত অটো ক্রয়ের নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

আহত অটো চালক পিন্টু মিয়া জানায়,  গত ২২ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০টার সময় রূপালি বাবুর বিল্ডিংএ বিদ্যুতিক ত্রুটির কারণে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উক্ত অগ্নিসংযোগ বাতেন ও শাহাদাত আগুন নিভাতে সাহায্য করে। এক পর্যায়ে উল্লেখিত বখাটেরা বাড়ীওয়ালার (বাবু) নিকট ৬৫ হাজার  টাকা দাবি করে। 

বাড়ি ওয়ালা আমার পূর্ব পরিচিত হওয়াইয় বিবাদী গণ আমার কারণে উক্ত চাঁদা বাজিতে সফল হয়নি। এ ঘটনার জের ধরে তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদম ভাবে কুপিয়ে অটোগাড়ী ক্রয়ের টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।  

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ