কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন পৃথকভাবে এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট টিএসসি থেকে এর প্রতিবাদে মিছিল বের করে। মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে তারা।

জোট সমন্বয়ক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সভাপতিত্বে ও সহ-সমন্বয়ক জাবির আহমদ জুবেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন জোট নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা তৌহিদুল ইসলামসহ সব বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচার দাবি করেন।

এতে বক্তব্য বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমদ জুবেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

সমাবেশের সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “জনগণ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল৷ পুলিশী রাষ্ট্র গঠন করা অভ্যুত্থানের চেতনা বিরোধী। অথচ আমরা দেখছি বর্তমান সরকারের আড়ালেও যারা সরকার পরিচালনা করছে, তাদের দ্বারা এ বিচার বহির্ভূত, হত্যাকাণ্ড, গুম, খুনের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।”

এদিকে, সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি সড়কদ্বীপে গিয়ে সমাবেশ করে তারা। এ সময় তারা তৌহিদুল হত্যাসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, “গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে হাসিনা তার ফ্যাসিস্ট শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ সেই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করেছেন,ফলে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে হাসিনার পতন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখেছে, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের কোনো চিহ্ন থাকবে না। গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থাকবে না এবং মানুষের মত প্রকাশের, চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলেও আমরা সেই স্বাধীনতা পাচ্ছি না। বিভিন্নভাবে বিরোধী মতের মানুষের ওপর মব তৈরি করা হচ্ছে। মবের মাধ্যমে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বিচার আমরা দেখিনি। মবের মাধ্যমে নারীদের ফুটবল খেলার আয়োজন ও মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ অবস্থান না নিয়ে মবকে উস্কো দিচ্ছে। যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

মশাল মিছিলে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বিথী, সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ দেব, প্রচার সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা নগরের সভাপতি আল-আমিন রহমান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি