সেনা হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
Published: 1st, February 2025 GMT
কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন পৃথকভাবে এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট টিএসসি থেকে এর প্রতিবাদে মিছিল বের করে। মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে তারা।
জোট সমন্বয়ক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সভাপতিত্বে ও সহ-সমন্বয়ক জাবির আহমদ জুবেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন জোট নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা তৌহিদুল ইসলামসহ সব বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচার দাবি করেন।
এতে বক্তব্য বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমদ জুবেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশের সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “জনগণ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল৷ পুলিশী রাষ্ট্র গঠন করা অভ্যুত্থানের চেতনা বিরোধী। অথচ আমরা দেখছি বর্তমান সরকারের আড়ালেও যারা সরকার পরিচালনা করছে, তাদের দ্বারা এ বিচার বহির্ভূত, হত্যাকাণ্ড, গুম, খুনের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।”
এদিকে, সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি সড়কদ্বীপে গিয়ে সমাবেশ করে তারা। এ সময় তারা তৌহিদুল হত্যাসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, “গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে হাসিনা তার ফ্যাসিস্ট শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ সেই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করেছেন,ফলে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে হাসিনার পতন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখেছে, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের কোনো চিহ্ন থাকবে না। গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থাকবে না এবং মানুষের মত প্রকাশের, চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলেও আমরা সেই স্বাধীনতা পাচ্ছি না। বিভিন্নভাবে বিরোধী মতের মানুষের ওপর মব তৈরি করা হচ্ছে। মবের মাধ্যমে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বিচার আমরা দেখিনি। মবের মাধ্যমে নারীদের ফুটবল খেলার আয়োজন ও মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ অবস্থান না নিয়ে মবকে উস্কো দিচ্ছে। যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
মশাল মিছিলে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বিথী, সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ দেব, প্রচার সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা নগরের সভাপতি আল-আমিন রহমান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস দেওয়ার সম্ভাবনা নেই: জ্বালানি উপদেষ্টা
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হবে না। কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম।
শুক্রবার সকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দুটি গ্যাসকূপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সিলেটের যেসব এলাকা থেকে গ্যাস উত্তোলন হয় সেসব এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হবে কি? -এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, শিল্প কারখানা যেখানে গ্যাস পাচ্ছে না সেখানে বাসা বাড়িতে গ্যাস দেওয়া অপচয়। নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হবে না। কেয়ামত পর্যন্ত এই সুযোগ বন্ধ রাখা উচিত। তবে যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন করা হয়, সেসব এলাকায় স্বল্পমূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহ করবে সরকার।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন কমছে। পাশাপাশি এলএনজি আমদানি বেড়েছে। এক্ষেত্রে গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর চেষ্টা চলছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, কৈলাশটিলা-৭ ও সিলেট-১০ গ্যাস কূপ থেকে থেকে প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে গোলাপগঞ্জে কৈলাসটিলা গ্যাসফিল্ড পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি উপজেলার পৌর এলাকার কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপ এলাকা, বাপেক্সের রিগ বিজয়-১২ ও কৈলাশটিলা ১ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভারের নিমিত্ত প্রস্তুতকৃত রিগপ্যাড পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি একই উপজেলাধীন কৈলাশটিলা এমএসটি প্লান্ট পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের (অপারেশন বিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মো. খালিদ আহমেদ, বাপেক্স/এসজিএফএলের প্রকৌশলী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহেব আহমদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেহসানুল ইসলাম, সেক্রেটারি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনির হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ডের ডিজিএম ফারুক আহমদ, কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ড এমএসটি প্লান্টের ডিজিএম জাফর রায়হানসহ সংশ্লিষ্ট কূপের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।