প্লে-অফ থেকে বেশ কয়েকজন বিদেশি তারকা ক্রিকেটারের যোগ দেওয়ার কথা ছিল বিপিএলের দুই বড় দল ফরচুন বরিশাল ও রংপুর রাইডার্সে। ডেভিড ওয়ার্নার, টিম ডেভিড, সুনিল নারিন, আন্দ্রে রাসেলের আসার কথা রংপুর রাইডার্সে। নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার অ্যাডাম মিলনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বরিশালের। বৈশ্বিক এ ক্রিকেটারদের আজ কোয়ালিফায়ার বা এলিমিনেটর ম্যাচে নাও পাওয়া যেতে পারে। 

খুলনা টাইগার্সের সঙ্গে রংপুর রাইডার্সের এলিমিনেটর ম্যাচ দুপুরে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে বিদেশি তারকা খেলানোর বাড়তি সুবিধা থাকে। নারিন, রাসেলদের উড়িয়ে এনে সে সুবিধা কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে রংপুর। বিদেশি ক্রিকেটার আনা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ নেই খুলনার। তারা দেশিদের শক্তি কাজে লাগিয়ে জয়ের ছন্দ ধরে রাখতে চায়। বিদেশি তারকা ক্রিকেটারের খোঁজে থাকা বরিশালের আজ কাউকে দলে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দেশিদের সঙ্গে ডেভিড মালান, জেমস ফুলারদের ওপরই আস্থা রাখতে হচ্ছে দলটিকে। এতে মন্দের ভালো হলেও হতে পারে। সেট হয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে খেলতে পারবে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে। লিগের শেষ ম্যাচে চিটাগংয়ের কাছে বরিশাল হেরে যাওয়ায় সন্ধ্যার কোয়ালিফায়ার ম্যাচের দিকে নজর থাকবে সবার। ফোকাস থাকবে রংপুরকে ঘিরেও। 

এক টিকিটে দুই ম্যাচ দেখা বিপিএলের সংস্কৃতি। একাদশ বিপিএলের প্লে-অফের নিয়মও তাই। সোমবার কর্মদিবস হলেও বেশির ভাগ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট উন্মাদনা দেখা যেতে পারে দুপুর থেকেই। কারণ রংপুর নিজস্ব সমর্থক বাহিনী নিয়ে ম্যাচ খেলবে। সেই তুলনায় খুলনার নিজস্ব সমর্থক থাকবে গ্যালারিতে। তবে উপচে পড়া ভিড় দেখা যেতে পারে সন্ধ্যায় বরিশাল-চিটাগংয়ের কোয়ালিফায়ার ম্যাচে। 

দুপুর দেড়টায় শুরু হতে যাওয়া এলিমিনেটর ম্যাচে পরাজিত দল বিদায় নেবে। জয়ী দল খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। প্রথম কোয়ালিফায়ারের পরাজিত দল হবে তাদের প্রতিপক্ষ। সেদিক থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল বরিশাল ও চিটাগংকে সৌভাগ্যবান বলতে হবে। হারলেও ফাইনালে উন্নীত হতে দ্বিতীয় সুযোগ পাবে। রংপুর দলের ক্রিকেটাররা আজকের প্লে-অফকে বাঁচা-মরার লড়াই হিসেবে দেখছেন। 

অলরাউন্ডার শেখ মেহেদীর মতে, ‘এখানে (সেরা দুইয়ে) থাকতে পারলে ভালো হতো। এখন তো আমাদের চ্যালেঞ্জটা আরও বেশি। সেরা দুইয়ে থাকলে সুযোগ দুইটা থাকে। এখন পুরো নকআউটে চলে এসেছি। এটা আসলে বাঁচা-মরার ম্যাচ। দেখা যাক আগামীকাল (আজ) কী হয়।’

রংপুর এলিমিনেটর ম্যাচে আন্দ্রে রাসেল ও সুনিল নারিনকে খেলাতে পারে। কারণ আবুধাবি নাইট রাইডার্স আইএল টি২০ লিগের প্লে-অফে উন্নীত হয়নি। পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা দলটির শেষ ম্যাচ ছিল গতকাল। রাতের বিমান ধরে সকালে ঢাকা পৌঁছে থাকলে দুই ক্যারিবীয়কে নিয়ে একাদশ সাজাতে পারেন কোচ মিকি আর্থার। 

শেষপর্যন্ত তারা না এলেও ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী শেখ মেহেদী, ‘বিশ্বাস তো সব সময় আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড় বিশ্বাস নিয়ে যায় মাঠে। কিন্তু সব সময় দিন এক রকম যায় না। আমরা কোয়ালিফায়ার ম্যাচে না খেললেও একটা সুযোগ আছে। সুযোগটা ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি। আমার মনে হয়, দলে যারা আছে, সবাই ফুরফুরে মেজাজে আছে। কারণ, এ সময় দল হিসেবে যদি ভেঙে পড়ি, আমরা চারটা হেরেছি, তাহলে এখান থেকে বের হতে পারব না।’ 

তিনি জানান, গত দুই মৌসুমে তিন নম্বরে শেষ করা রংপুর এবার প্রতিরোধের দেয়াল ভাঙতে চায়। অন্যদিকে বরিশাল চায় আজ জিতে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করতে। আর বাজিমাতের অপেক্ষায় আছে চিটাগং।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ