রাজধানীতে আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিতরণের অভিযোগে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুকিব মিয়াকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমানের বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমানসহ আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবিতে ক্যাম্পাসে পৃথক মিছিল করেছে শাখা ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

মিছিল শেষে শেকৃবি ছাত্রদল সভাপতি তাপস কবির বলেন, ক্যাম্পাসে অবস্থান করা আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তারা এখনও বুক ফুলিয়ে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকে আসা অন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে শেকৃবির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাসা। আমরা দ্রুত এসব শিক্ষক-কর্মকর্তার বিচার ও প্রত্যাহার চাই।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মিছিলের পর প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি পেশ করে। দাবিগুলো হলো– আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাসা বাতিল ও প্রত্যাহার, জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারকাণ্ডে তিন দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ।

মিছিল শেষে শেকৃবি সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কৃষি ও পরিবেশ সেলের সম্পাদক তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, তদন্তের নামে বর্তমান প্রশাসন প্রহসন করছে। ছয়-সাত মাস পার হলেও ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও সমর্থনকারীদের এখনও বিচার শেষ করতে পারেনি তারা। ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পদচারণায় আমরা নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছি। প্রশাসনকে আগামী তিন দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের বিচার ও প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগপন্থি সবার বাসার বরাদ্দ বাতিল করতে হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা দ্রুত সময়ে বিচারকাজ শেষ করব। আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের অপেক্ষায় আছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আটক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ