ইনভাইটস নামের নতুন অ্যাপ আনল অ্যাপল, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
Published: 5th, February 2025 GMT
‘ইনভাইটস’ নামে নতুন অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল। অ্যাপটির মাধ্যমে আইফোন ব্যবহারকারীরা যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য নিজেদের পছন্দমতো নকশার আমন্ত্রণপত্র তৈরি করে অন্যদের পাঠাতে পারবেন। পাশাপাশি আমন্ত্রিত অতিথিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত করতে পারবেন। এর ফলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের সম্ভাব্য সংখ্যা জানা যাবে।
অ্যাপলের তথ্যমতে, ইনভাইটস অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা চাইলে ব্যক্তিগত ফটো লাইব্রেরি থেকে ছবি নির্বাচনের পাশাপাশি অ্যাপের গ্যালারিতে থাকা ছবি ব্যবহার করে পছন্দমতো নকশার আমন্ত্রণপত্র তৈরি করতে পারবেন। অ্যাপটি অ্যাপল ম্যাপস ও আবহাওয়া অ্যাপের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। ফলে অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলের দিকনির্দেশনাসহ আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানতে পারবেন। শুধু তাই নয়, অংশগ্রহণকারীরা শেয়ার্ড অ্যালবাম ফিচার ব্যবহার করে অনুষ্ঠানে তোলা ছবি ও ভিডিও জমা রাখতে পারবেন। এর ফলে অনুষ্ঠানে তোলা সব ছবি ও ভিডিও দেখার পাশাপাশি সংরক্ষণ করা যাবে।
অ্যাপলের আইক্লাউড পণ্য বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ব্রেন্ট চিউ ওয়াটসন বলেন, ইনভাইটস অ্যাপের মাধ্যমে আমন্ত্রণপত্র তৈরি করে অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলার পাশাপাশি অনুষ্ঠানের স্মৃতিও ধরে রাখা যাবে। আইফোন, আইক্লাউড ও অ্যাপল মিউজিকের সমন্বয়ে এটি বিশেষ মুহূর্তগুলোর পরিকল্পনাকে আরও সহজ করে তুলবে।
আইওএস ১৮ অপারেটিং সিস্টেমে চলা সব আইফোন ব্যবহারকারী ইনভাইটস অ্যাপটি অ্যাপ স্টোর থেকে বিনা মূল্যে নামিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া আইক্লাউডের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেও ইনভাইটস অ্যাপের সব সুবিধা ব্যবহার করা যাবে।
সূত্র: টেক ক্র্যাঞ্চ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।