‘স্ট্রেচার’ থেকে নেমে আলিসের ‘চার’, শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ফাইনালে চিটাগং
Published: 5th, February 2025 GMT
খাজা নাফে-হুসেইন তালাত যেভাবে ব্যাট করছিলেন চিটাগং কিংসের জয় মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। চার-ছয়ের মারে কমে আসছিল বলের সঙ্গে রানের পার্থক্য। তখনই নাসুম আহমেদের আঘাত। এরপর নাফের উইকেট ভেঙে মুশফিক হাসান যেন চিটাগং কিংসের স্বপ্নও ভেঙে দেন। কিন্তু না! গল্পের এখানেই শেষ নয়। স্ট্রেচার থেকে মাঠে ফিরে আলিস আল ইসলাম লেখেন রূপকথার গল্প।
শেষ বলে প্রয়োজন ছিল চার, বুদ্ধিদীপ্ত শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১১ বছর পর বিপিএলের ফাইনালে নাম লেখায় চিটাগং কিংস। আর পঞ্চমবার প্লে’অফে ওঠা খুলনার সামনে সুযোগ ছিল ফাইনালে নাম লেখানোর, কিন্তু ভাগ্য কথা বলেনি। মুশফিক হাসান হতে পারেন নায়ক, কিন্তু শেষ ওভারে ১৫ রান দিয়ে বনে যান খলনায়ক!
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে টস জিতে বোলিং নেয় চিটাগং। ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান করে খুলনা। তাড়া করতে নেমে ২ উইকেটে জয় নিয়ে চিটাগং মাঠ ছাড়ে। ৭ বলে ১৭ রান নিয়ে ম্যাচসেরা হন আলিস। বল হাতে ৪ ওভারে ১৪ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট।
আরো পড়ুন:
হেটমায়ার ঝড়ে শেষ চার ওভারে ৬৯, খুলনার চ্যালেঞ্জ
ইয়াশা সাগরকেও টাকা দেয়নি চিটাগং কিংস, ‘হেনস্থার’ অভিযোগ
১৮তম ওভারে জেসন হোল্ডারকে পরপর ছয়-চারে রানের ব্যবধান কমিয়ে দেন আলিস আল ইসলাম। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ২১। হাসান মাহমুদের করা ১৯তম ওভারে ৬ রানের বেশি নিতে পারেনি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। মুশফিক হাসানের প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচ জমিয়ে দেন আরাফাত সানি। পরের বলে ডাবলের পর তৃতীয় বলে ডাবল নিতে গিয়ে মাঠ ছাড়েন আলিস। সানির সঙ্গী হন শরিফুল ইসলাম। চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে শরিফুল ব্যবধান কমিয়ে দুই বলে চার রানে আনেন। পরের বলের আউট হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৪। স্ট্রেচার থেকে নেমে আলিস চার মেরে উল্লাসে ভাসান চিটাগংকে।
চিটাগংয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন নাফে। ৪৬ বলে এই রান করেন তিনি। এ ছাড়া ৪০ রান করেন তালাত। দুজনে জুটিতে যোগ করেন ৭০ রান। এরপর পরপর উইকেট পড়লেও টেল এন্ডাররা ম্যাচ বের করে আনেন। আরাফাত সানি ১৮ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন মুশফিক হাসান-হাসান মাহমুদ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ ওভার পর্যন্ত ধুঁকেছে দলটি। বলের চেয়ে রানের সংখ্যা ছিল কম। ধীরে ধীরে ক্রিজে সেট হওয়া শিমরন হেটমায়ারের ঝড়ের পর জেসন হোল্ডার-মোহাম্মদ নাওয়াজের ক্যামিওতে চিটাগং কিংসকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে খুলনা।
মাত্র ৩৩ বলে ৬৩ রান করেন হেটমায়ার। অথচ প্রথম ২১ বলে এসেছিল মাত্র ২২ রান! এর পরের ১২ বলে করেন ৪১ রান। ৪টি ছয় ও ৬টি চারের মারে ইনিংসটি সাজান হেটমায়ার।
৪২ রানে ৪ উইকেটের পতনের পর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন হেটমায়ার। ৩২ বলে ৪১ রানে অঙ্কন আউট হলে ভাঙে ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি। শেষে হোল্ডার ৫ বলে ১২ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ ২ বলে ৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
খুলনার প্রথম চার ব্যাটারের মধ্যে শুধু মোহাম্মদ নাঈম শেখ দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেন। ২২ বলে ১৯ রান করেন নাঈম শেখ। চিটাগংয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন বিনুরা ফার্নান্দো।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর ন ল ইসল ম উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত