সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সিংগারপাড়া গ্রামে ফসলি জমি নিয়ে বিরোধে তিনজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামির সন্তান পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় ১৫ দিনে পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে এ অভিযোগ করেছে বাদী পক্ষ। 

মামলা থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সুমিন তালুকদারের বাবা মারা যান। সিংগারপাড়া মৌজায় তাঁর রেখে যাওয়া ১৩ শতাংশ জমি একই গ্রামের কৃষক লীগ নেতা মোহাব্বত আলী দখলের পাঁয়তারা করছেন। বিষয়টি নিয়ে সালিশও হয়। সেখানে মোহাব্বত আলীর সঙ্গে সুমিন তালুকদারের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর পর মোহাব্বত আলী থানায় অভিযোগ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে বিষয়টি মীমাংসার দায়িত্ব দেন গ্রামপ্রধানদের। সালিশে গ্রামপ্রধানরা সুমিন তালুকদারের পক্ষে রায় দেন। মোহাব্বত আলী এ রায় অস্বীকার করে ২০ জানুয়ারি লোকজন নিয়ে ওই জমি চাষ করতে যান। তখন সুমিনের ছোট ভাই বাধা দিলে মোহাব্বত আলীর নির্দেশে ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান কাজল কুড়াল দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সুমিন সেখানে গেলে তাদেরও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। স্থানীয়রা তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

মামলার বাদী সুমিন তালুকদার জানান, চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৩ জানুয়ারি আদালতে মামলা করি। আদালত পুলিশ কর্মকর্তাকে ৩২৬ ধারায় এফআইআর করার আদেশ দেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। তিনি বলেন, মামলার ১ নম্বর আসামি মোহাব্বর আলীর মেয়ে রংপুর জেলা পুলিশের কর্মকর্তা। তাঁর প্রভাবে তাড়াশ থানার পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করছে না। উল্টো আসামিরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে পরিবারের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।    

এ অভিযোগ অস্বীকার করে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, মামলার বাদীকে দু’দিন ফোনে ডেকেছি এজাহারে স্বাক্ষর করার জন্য। তিনি আসেননি। তার পরও আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

সিরিয়ার পর নিজেদের কেন টার্গেট মনে করছে তুরস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে ইসরায়েল সম্প্রতি সিরিয়ার দামেস্ক ও সুওয়াইদার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে যে সুওয়াইদায় দ্রুজ মিলিশিয়া ও সুন্নি বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুজদের রক্ষা করতে এই হামলাগুলো চালানো জরুরি ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলার ফলে নতুন করে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে তুরস্ককে একটি নাজুক পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে। আঙ্কারা এখন সিরিয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর তাদের কৌশলগত অবস্থান পুনরায় মূল্যায়ন করছে। সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন ও সিরিয়ার রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে তুর্কি রাজনীতিবিদেরা নজিরবিহীন চাপের মধ্যে রয়েছেন।

দ্য নিউ আরবকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুর্কি নিরাপত্তা বিশ্লেষক এরসান এরগুর ব্যাখ্যা করেছেন যে সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা এখন তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ভিত্তিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘আঙ্কারা এখন আর সিরিয়ার ইস্যুকে কেবল একটি বৈদেশিক নীতির বিষয় হিসেবে দেখে না, বরং এটিকে অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার বিষয় হিসেবে দেখে।’ তিনি আঞ্চলিক বিভাজন থেকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া এবং আবার তুরস্কে শরণার্থীর ঢল নামতে পারে—এমন আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন।

এরগুর বলেন, তুরস্কের কৌশলটি তার ‘সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক’ প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তুরস্কের এ প্রকল্পটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করে। তুরস্কের ভূরাজনৈতিক অবস্থান, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নেটওয়ার্কগুলো সঙ্গে গভীর যুক্ততার কারণে আঙ্কারা সিরিয়াকে স্থিতিশীল করতে চায়। এটি শুধু তার সীমান্ত রক্ষা করার জন্য নয়, বরং তার আশপাশে ব্যর্থ রাষ্ট্রগুলোর উত্থান রোধ করার জন্যও।

ইসরায়েলি হামলার পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরের কাছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। ১৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ