কুমিল্লায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে দুই নারী টেঁটাবিদ্ধ, গ্রেপ্তার ২
Published: 6th, February 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই নারীকে টেঁটাবিদ্ধ করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
উপজেলা সদর ইউনিয়নের হীরারকান্দা গ্রামে গত মঙ্গলবার বিকেলে দুই নারী টেঁটাবিদ্ধ হন। তাঁরা হলেন ওই গ্রামের প্রয়াত লিল মিয়ার মেয়ে হোসনা আক্তার ও নাতনি আফসানা আক্তার। গতকাল বুধবার ওই ঘটনার ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই হোসনা আক্তারের বোন আছমা বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা করেন। এ সময় ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে; ১ নম্বরে আছেন তাঁদের চাচা মজিবুর রহমান।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে মজিবুর রহমান পলাতক। তাঁকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মজিবুর রহমানের স্ত্রী ও এক মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, হোসনা আক্তারের বাবা লিল মিয়া প্রায় চার বছর আগে মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি স্ত্রী জামেনা বেগমের নামে বাড়ির জায়গা দলিল করে দেন। লিল মিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর ভাই মজিবুর বাড়িটি দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় জামেনা বেগমের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে জামেনা বেগম নিজের বাড়ির জায়গায় লাকড়ি শুকাতে দিলে এটি তাঁর জায়গা নয় বলে দাবি করেন মজিবুর রহমান। তিনি, তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম, ছেলে আনিছুর রহমান, মেয়ে ডালিয়া আক্তার গালমন্দ করতে থাকেন। জামেনা বেগম প্রতিবাদ করলে মজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা মারধর করতে থাকেন।
জামেনা বেগমের চিৎকার শুনে পাশেই শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর মেয়ে হোসনা আক্তার ও নাতনি আফসানা আক্তার ছুটে আসেন। এ সময় ওই দুজনকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে মজিবুর রহমান ঘর থেকে টেঁটা এনে আফসানা আক্তারকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে হোসনা আক্তারের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হয়। পরে আফসানা আক্তারকেও টেঁটা দিয়ে আঘাত করেন মজিবুর। এলাকার লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হোসনা আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জামেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর আমাদের বাড়ি জায়গা দখল করার জন্য এর আগেও মজিবুর কয়েকবার আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল। আমরা এই নির্যাতনের বিচার চাই। আমার মেয়ে ও নাতিনকে সে হত্যা করতে চেয়েছিল।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু
কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওই দুই স্কুলছাত্র বরুড়ার উপজেলার বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপর ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বজ্রপাতে দুই কৃষক মারা গেছেন।
স্থানীয়রা বলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত বীর চরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।
কোরবানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থনের পাশের একটি মাঠে জমিতে ধান কাটছিলেন ওই দুই কৃষক। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলে ওই দুই কৃষক মারা যান। পরে এলাকাবাসী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় খবর দেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে দুই জন কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।