যুক্তরাষ্ট্রে মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। গত ডিসেম্বরেও ডিমের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল। এই যখন পরিস্থিতি, তখন পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে চুরি গেছে ১ লাখ ডিম। এই চুরির রহস্য ভেদ করতে গলদঘর্ম পেনসিলভানিয়া পুলিশের। ডিম চুরি যাওয়ার পর চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পুলিশ এ রহস্যের কোনো কূলকিনারা খুঁজে পায়নি।
গত বুধবার পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্য পুলিশের মুখপাত্র মেগান ফ্রেজার বলেন, ‘আমরা বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত চালাচ্ছি। তাই আমাদের আশা, কেউ না কেউ কিছু না কিছু জানবে, তারা আমাদের ফোন করবে এবং এই চুরির ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য দেবে।’
পুলিশ নিজেরাও সম্ভাব্য প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টাও চলছে। এই রহস্য ভেদ করতে সব রকমভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ।
বহু বছর ধরে পুলিশ বিভাগে কাজ করছেন ফ্রেজার। তিনি বলেন, ‘আমার পেশাজীবনে আমি কখনো এক লাখ ডিম চুরি যাওয়ার কথা শুনিনি। নিশ্চিতভাবেই এটা অন্য রকম।’
গত ডিসেম্বরেও যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে এক ডজন ডিমের দাম ছিল সোয়া ৪ ডলার। দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দাম সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৮২ ডলারে উঠেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটার পর অ্যান্ট্রিম শহরতলির পিট অ্যান্ড জেরিস অর্গানিকস নামে একটি দোকানের পণ্য বিতরণ গাড়ি থেকে এক লাখ ডিম চুরি যায়।
চুরি যাওয়া ডিমের বাজারমূল্য ৪০ হাজার ডলারের বেশি বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ফ্রেজার। তিনি বলেন, এর মানে এটি একটি গুরুতর অপরাধ।
বার্ড ফ্লুর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের খামারিরা এক মাসের মধ্যে লাখ লাখ মুরগি মেরে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। এ কারণে দেশটিতে হঠাৎ ডিমের দাম রকেট গতিতে বাড়তে শুরু করে। দুই বছর আগের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে এখন ডিমের দাম দ্বিগুণের বেশি। সামনে ইস্টার উৎসব, কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে ডিমসংকটের সমাধান হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।
পিট অ্যান্ড জেরিস অর্গানিকস কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে ডিম চুরির ঘটনা তদন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এই ঘটনাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং যত দ্রুত সম্ভব চুরি রহস্যের সমাধান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রহস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস