তিন দিবসে গদখালীতে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা
Published: 8th, February 2025 GMT
এখন শীতকাল—ফুলের মৌসুম। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতে বেশি ফুল ফোটে। উর্বর ভূমির এই বাংলাদেশে ফোটে বৈচিত্র্যময় ফুল। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবেও নানা প্রজাতির ফুল চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এলাকা হরেক রকমের ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। এ এলাকার ফুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।
সারা বছরই ফুল কেনাবেচা হলেও বিশেষ দিবসগুলোতে এর চাহিদা বাড়ে। ফেব্রুয়ারি মাসেই আসছে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও শহীদ দিবস। এসব দিবসে ফুলের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায়। তাই, গদখালী এলাকায় ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা বাড়ছে।
ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আসন্ন তিনটি দিবসে ফুলের চাহিদা ও দাম বাড়বে। অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন তারা।
ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চাষ হচ্ছে নানা জাতের ফুল। এ অঞ্চলের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ অন্তত ১৩ ধরনের ফুল।
গদখালী বাজারে সকালে ফুলের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, চাষিরা তাদের উৎপাদিত বাহারি সব ফুল বিভিন্ন যানবাহনে করে এনে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বিক্রির জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।
গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের বাজারদর। ২ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি গোলাপ। গত সপ্তাহে যে গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৫ টাকায়, শনিবার তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকায়।
ফুল চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সামনের তিন দিবসে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করা সম্ভব হবে।
গদখালী ও পানিসারা বাজারে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকায়। প্রতি পিস জারবেরা ৮ থেকে ১০ টাকা, রজনীগন্ধার প্রতি স্টিক ৮ থেকে ১০ টাকা, জিপসির আঁটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ১ হাজার গাদা ফুল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রংভেদে ৮ থেকে ১২ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিবস যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দাম ততই বাড়ছে।
ফুলচাষিরা বলছেন, আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরো বাড়বে এবং আমরা আরো লাভবান হতে পারব।
কুষ্টিয়া থেকে ফুল কিনতে আসা ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন বলেন, “প্রায় ১৫ হাজার টাকার ফুল কিনেছি। গোলাপ বেশি কিনেছি। অন্যান্য বারের তুলনায় এ বছর বেশি লাভ হবে বলে আশা করছি।”
গদখালী ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেছেন, “সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দাম তত বাড়ছে। বাজারদর ভালো পেয়ে ফুলচাষি, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা খুশি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বসন্তবরণ ও শহীদ দিবসকে ঘিরে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছি।”
গদখালী ও পানিসারা এলাকায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ করা হচ্ছে। প্রায় ৬ হাজার কৃষক ফুল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
শুধু শীত মৌসুম নয়, বছরের প্রায় ছয় মাসজুড়ে ফুল চাষ হয় এসব এলাকায়। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা।
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০০ ক ট ব যবস য় ১০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?