ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে লুটপাট চলছেই
Published: 9th, February 2025 GMT
ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট অব্যাহত রয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটিতে। গতকাল শনিবার টানা চতুর্থ দিনের মতো ভাঙা চলেছে সেখানে। এদিনও যে যা পেরেছেন, লুটে নিচ্ছেন। একই এলাকার ৫ নম্বর সড়কের শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে অনেকটাই নীরবতা নেমে এসেছে। এই লুটপাটের মধ্যে দুই বাড়ির কোনোটিতেই পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে চোখে পড়েনি।
গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শ্রমজীবী মানুষ এসে সেখানে লুটপাটে অংশ নিয়েছেন। বাড়িটির শেষাংশ শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার কাজে ব্যস্ত ছিলেন তারা। বিভিন্ন কক্ষের দেয়াল ভেঙে ইট বের করে নিচ্ছিলেন অনেকে। কেউ আবার বাড়ির বিভিন্ন তলা থেকে রড ও লোহা কাটছেন। কেউ হাতুড়িপেটা করে আংশিক বের হয়ে থাকা রড পুরোটা বের করেছেন। কেউ আবার ভাঙাড়িতে বিক্রি করা যাবে– এমন যা যা পাচ্ছেন, সবই নিচ্ছেন।
এক যুবককে দেখা গেল একটি ভ্যানে করে পুড়ে যাওয়া ও ভাঙা একটি গাড়ির অংশ বিশেষ তুলে নিয়ে যেতে। নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ না করে তিনি জানালেন, ভাঙাড়ির দোকানে নিয়ে বিক্রি করে দিয়ে যা পাওয়া যাবে, সেটাই তার লাভ।
গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়িটির একটি কলামে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে আঘাত করে করে ভেতরের রডগুলো বের করার চেষ্টা করছিলেন জিগাতলা এলাকা থেকে আসা আসলাম মিয়া। সঙ্গে ছিলেন দুই ছেলে ও স্ত্রী। আসলাম বলেন, সকাল ৮টায় এসে ভাঙার কাজ শুরু করেছেন তারা। ভাঙা শেষ করতে আরও ঘণ্টা দুয়েক লাগতে পারে। সেখান থেকে ২০-২৫ কেজি রড পাওয়া যেতে পারে। যা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে।
ভবনটির সামনের জায়গায় আবদুল আজিজ ও জসীম উদ্দিন নামে দুই যুবককে দেখা গেল, সেখানে উপড়ে ফেলা একটি কাঁঠাল গাছ কুঠার দিয়ে কাটায় ব্যস্ত। তাদের সামনে রাখা ছিল একটি ঠেলাগাড়ি। আজিজ জানান, গাছটি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যাবেন। পরে সেগুলো লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করবেন।
লুটপাটের এমন দৃশ্যপটের মধ্যে লোহালক্কড় কিনতে ভিড় জমিয়েছেন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীরাও। রীতিমতো যেন দোকান বানিয়ে বসেছেন সেখানে। এমন একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী শিকদার আলী জানান, তিনি এখানে এসেছেন সকাল সাড়ে ৯টায়। দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৫০ কেজির মতো রড ও কিছু ভাঙা টিন, কাচ, প্লাস্টিক ইত্যাদি কিনেছেন। রডের মানভেদে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে কিনছেন। এগুলোই আবার তিনি বেশি লাভে বিক্রি করবেন অন্যদের কাছে।
লুটপাটের উদ্দেশ্যে আসা এসব শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষের পাশাপাশি গতকালও উৎসুক হাজারো মানুষের ভিড় দেখা গেছে বাড়িটির চারপাশে। মোবাইলে ছবি কিংবা ভিডিও করছিলেন তাদের কেউ কেউ।
ভূতুড়ে পরিবেশ সুধা সদনে
ধানমন্ডি ৫ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাড়ি সুধা সদন এখন অনেকটাই নীরব। আশপাশের অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, আগের তিন দিন সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল। শনিবার দুয়েকজন ছাড়া তেমন কেউই আসেননি।
তবে অল্প কয়েকজন শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষকে এদিনও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া চারতলাবিশিষ্ট সুধা সদনের ভেতরে শেষ সময়ের লুটপাটে অংশ নিতে দেখা গেছে। তারা পুড়ে যাওয়া কাঠ, টুকরো লোহা আর ধাতব বস্তু সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হলেন অধ্যাপক হযরত আলী
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এই পদে নিযুক্ত করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটের উপাচার্য পদের রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।