ভারতের প্রয়াগরাজ শহরে চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাগম মহাকুম্ভ মেলা। প্রতি ১২ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। লাখ লাখ মানুষের সমাগম হওয়ায় পদদলিত হয়ে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটছেন পুণ্যস্নানে। ভারতীয় অনেক তারকাও এ মেলায় যোগ দিয়েছেন। কমেডিয়ান ভারতী সিং এই মেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সর্বশেষ যাননি তিনি। কেন যাননি তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতী।

ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ভারতী সিং বলেন, “অজ্ঞান হয়ে মরতে যাব নাকি হারিয়ে যেতে?”

আরো পড়ুন:

রাখিকে মুফতির বিয়ের প্রস্তাব

চতুর্থ বিয়ের স্বপ্ন দেখেন ছেষট্টির লাকি আলী

খানিকটা ব্যাখ্যা করে ভারতী সিং বলেন, “আমি সত্যি যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিদিন সেখান থেকে এমন কিছু দুঃখজনক খবর শুনতে পাই যে, গোলেকে (ছেলে) নিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারছি না।”

ভারতীর মন্তব্য নিয়ে চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ বলছেন, “একেবারেই ঠিক বলেছেন ভারতী।” কারো কারো মত— “সঠিক তথ্য না থাকলে এভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।”

একজন লিখেছেন, “আপনি কীভাবে জানলেন যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তারা সবাই অচৈতন্য হয়ে মারা গিয়েছেন। সবকিছু নিয়ে এমন রসিকতা একেবারেই ঠিক নয়। আবার কেউ লিখেছেন, “দয়া করে এমন ভিত্তিহীন কথা বলে কুম্ভমেলার বদনাম করবেন না।”

ভারতের চারটি শহর— হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ, মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী ও মহারাষ্ট্রের নাসিকে তিন ধরনের কুম্ভ মেলা হয়ে থাকে। মহাকুম্ভ ছাড়াও পূর্ণ কুম্ভ এবং অর্ধ-কুম্ভেরও আয়োজন হয়। তবে মহাকুম্ভ শুধু প্রয়াগরাজেই হয়ে থাকে।

প্রতি ১২ বছর অন্তর ক্রমানুসারে হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী ও নাসিক ও প্রয়াগরাজে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দুদের একাংশের বিশ্বাস, এ বছর গ্রহ-নক্ষত্রের এমন যোগ রয়েছে, যা ১৪৪ বছর পরে এলো।

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, সমুদ্র মন্থনের সময়ে রাক্ষস ও দেবতাদের মধ্যে ‘অমৃত’ নিয়ে লড়াই হয়েছিল। এই ‘অমৃত’ পান করলে অমরত্ব পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস রয়েছে হিন্দু ধর্মে। ওই লড়াইয়ের সময়ে কয়েক ফোঁটা অমৃত প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক ও উজ্জ্বয়িনীতে পড়েছিল।

পুরাণে এটাও বর্ণিত আছে যে, অমৃতের কলসটি মর্ত্য থেকে স্বর্গে পৌঁছাতে ১২ দিন লেগেছিল। আর দেবতাদের একদিন মর্ত্যের হিসাব অনুযায়ী এক বছর সময়কাল। সেজন্যই ১২ বছরে একবার করে পূর্ণ কুম্ভ আয়োজিত হয়।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বনভূমি উজাড় ও গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে যদি বলা হয় যে আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই, তাহলে খুব বেশি ভুল হবে না। ৮০ সাল পর্যন্ত এখানে বন ছিল, গাছপালা ছিল, ঝোপঝাড় ছিল। এই অঞ্চলে বা দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনো অংশ কম দায়ী নয়।

সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের চেয়ে বড় আকারের বনভূমি এখন মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী কিংবা সিলেটে দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে এই অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো সবার ভাবতে হবে।

পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে শীতের অনুভূতি পাওয়া যেত। এখন কার্তিক মাসেও শীতের অনুভূতি পাওয়া যায় না। যারা আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা প্রকৃতি সচেতন ছিল। তাই তাদের ওপর খুব বেশি ভূমি ধস হয়েছে শোনা যায় না। তাদের বাড়িঘরেও হয়নি। প্রকৃতিকে যারা চেনে না, তাদের ওপর ভূমিধস হয়।

বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব এ কে এম আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এসম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বৃক্ষমেলায় ২১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ