জ্ঞান হারিয়ে মরতে কুম্ভ মেলায় যাব, কমেডিয়ানের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক
Published: 9th, February 2025 GMT
ভারতের প্রয়াগরাজ শহরে চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাগম মহাকুম্ভ মেলা। প্রতি ১২ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। লাখ লাখ মানুষের সমাগম হওয়ায় পদদলিত হয়ে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটছেন পুণ্যস্নানে। ভারতীয় অনেক তারকাও এ মেলায় যোগ দিয়েছেন। কমেডিয়ান ভারতী সিং এই মেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সর্বশেষ যাননি তিনি। কেন যাননি তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতী।
ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ভারতী সিং বলেন, “অজ্ঞান হয়ে মরতে যাব নাকি হারিয়ে যেতে?”
আরো পড়ুন:
রাখিকে মুফতির বিয়ের প্রস্তাব
চতুর্থ বিয়ের স্বপ্ন দেখেন ছেষট্টির লাকি আলী
খানিকটা ব্যাখ্যা করে ভারতী সিং বলেন, “আমি সত্যি যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিদিন সেখান থেকে এমন কিছু দুঃখজনক খবর শুনতে পাই যে, গোলেকে (ছেলে) নিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারছি না।”
ভারতীর মন্তব্য নিয়ে চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ বলছেন, “একেবারেই ঠিক বলেছেন ভারতী।” কারো কারো মত— “সঠিক তথ্য না থাকলে এভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।”
একজন লিখেছেন, “আপনি কীভাবে জানলেন যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তারা সবাই অচৈতন্য হয়ে মারা গিয়েছেন। সবকিছু নিয়ে এমন রসিকতা একেবারেই ঠিক নয়। আবার কেউ লিখেছেন, “দয়া করে এমন ভিত্তিহীন কথা বলে কুম্ভমেলার বদনাম করবেন না।”
ভারতের চারটি শহর— হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ, মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী ও মহারাষ্ট্রের নাসিকে তিন ধরনের কুম্ভ মেলা হয়ে থাকে। মহাকুম্ভ ছাড়াও পূর্ণ কুম্ভ এবং অর্ধ-কুম্ভেরও আয়োজন হয়। তবে মহাকুম্ভ শুধু প্রয়াগরাজেই হয়ে থাকে।
প্রতি ১২ বছর অন্তর ক্রমানুসারে হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী ও নাসিক ও প্রয়াগরাজে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দুদের একাংশের বিশ্বাস, এ বছর গ্রহ-নক্ষত্রের এমন যোগ রয়েছে, যা ১৪৪ বছর পরে এলো।
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, সমুদ্র মন্থনের সময়ে রাক্ষস ও দেবতাদের মধ্যে ‘অমৃত’ নিয়ে লড়াই হয়েছিল। এই ‘অমৃত’ পান করলে অমরত্ব পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস রয়েছে হিন্দু ধর্মে। ওই লড়াইয়ের সময়ে কয়েক ফোঁটা অমৃত প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক ও উজ্জ্বয়িনীতে পড়েছিল।
পুরাণে এটাও বর্ণিত আছে যে, অমৃতের কলসটি মর্ত্য থেকে স্বর্গে পৌঁছাতে ১২ দিন লেগেছিল। আর দেবতাদের একদিন মর্ত্যের হিসাব অনুযায়ী এক বছর সময়কাল। সেজন্যই ১২ বছরে একবার করে পূর্ণ কুম্ভ আয়োজিত হয়।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যাবে
ইরানের রাজধানী তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেক মানুষ। তবে গত কয়েক দিনের মতোই তেহরানের রাস্তাঘাট এখনো যানজটে ঠাসা।
বিবিসি পার্সিয়ানের প্রতিবেদক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ জানান, তিনি এমন একটি পরিবারকে চেনেন, যারা তেহরান থেকে রওনা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছে ১৪ ঘণ্টা পর। অথচ এই যাত্রাপথ সাধারণত তিন ঘণ্টায় শেষ হওয়ার কথা।
এত সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পারায় পরিবারটি নিজেদের ‘ভাগ্যবান’ মনে করছে।
পরিবারটির সদস্যদের ভাষায়, ‘ভাগ্যক্রমে’ শেষ পর্যন্ত তাঁরা তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
তেহরানের বাসিন্দাদের আরও অনেকেই এমন কথা বলেছেন। তাঁরা রাজধানী থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তাঁদের অনেকে আবার উদ্বিগ্ন প্রিয়জনদের নিয়ে, যাঁরা এখনো তেহরান ছাড়তে পারেননি।
বিবিসির এই সাংবাদিক গত রাতে তাঁর এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি তেহরান ছাড়তে পেরেছেন কি না।
জবাবে বন্ধু বলেন, ‘রাস্তা একেবারে আটকে আছে। এখন বেরোলে শুধু যানজটে আটকে থাকতে হবে। আর এই সময়ে তা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’
প্রথমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তেহরানের একটি অংশের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বলেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সবাইকে তেহরান ছেড়ে যেতে হবে।
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার নজিরবিহীন সংঘাত পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। উভয় পক্ষ আকাশপথে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় ইরানে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
তেহরানে তখন ভোর সাড়ে চারটা বাজে। তবু বহু মানুষ তখনো জেগে ছিলেন।
সাংবাদিক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ যে ইরানি গ্রুপ চ্যাটগুলোতে আছেন, সব কটিই এখন রূপ নিয়েছে রাজনৈতিক আলোচনার জায়গায়। সঙ্গে কোথায় কোথায় হামলা হচ্ছে, তা জানানোর প্ল্যাটফর্মও হয়ে উঠেছে সেগুলো।
একটি চ্যাট গ্রুপে একজন লিখেছেন, ‘আমি একদম বিধ্বস্ত-শরীরেও, মনেও। টানা চার রাত ঘুমাইনি।’
চ্যাট গ্রুপে আরেকজন জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যেতে পারে?’
এই প্রশ্নের কোনো উত্তর আসেনি।