ভারতের সঙ্গীতশিল্পী প্রীতম চক্রবর্তীর স্টুডিও থেকে নগদ ৪০ লাখ রুপি নিয়ে পালিয়েছে গায়কের স্টুডিওতে কর্মরত এক অফিস সহায়ক। এমন ঘটনায় মালাড খানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রীতমের ম্যানেজার। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে মালাড পুলিশ। জানা যাচ্ছে ওই যুবকের নাম আশিস সায়াল।

জানা গেছে, একটি কাজের জন্য প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে ওই ৪০ লক্ষ রুপি অগ্রিম হিসাবে প্রীতমকে দিয়েছিল। 

পুলিশের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ৪ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে। সেসময় মধু মন্টেনার অফিস থেকে প্রোডাকশন হাউসের এক কর্মচারী গোরেগাঁওয়ে প্রীতম চক্রবর্তীর মিউজিক স্টুডিও 'ইউনিমিউজ রেকর্ডস প্রাইভেট লিমিটেড'-এ যান। তিনি প্রীতমের ম্যানেজার বিনীত ছেদাকে ৪০ লক্ষ রুপি নগদসহ একটা ব্যাগ দেন। সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই স্টুডিওর কর্মী আশিস সায়াল, আহমেদ খান এবং কমল দিশা।

পুলিশ সূত্রে খবর, গোরেগাঁও-মুলুন্দ লিঙ্ক রোডের রুস্তমজি ওজন বিল্ডিংয়ে রয়েছে জাতীয় পুরস্কারজয়ী সুরকার প্রীতমের ইউনিমিউজ রেকর্ডস প্রাইভেট লিমিটেড-এর অফিস। 

জানা যাচ্ছে, টাকা দেওয়ার পর প্রীতমের ম্যানেজার বিনীত ছেদা (২৯) নগদ টাকা গুনে একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে রাখেন। টাকা রেখে প্রীতমের বাড়িতে যান কিছু কাগজপত্রে তাকে সই করানোর জন্য।রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফিরে এসে দেখেন ব্যাগটি নেই। চুরি যাওয়া ব্যাগে ৫০০ টাকার ৮ হাজার নোট ছিল বলে জানা গেছে। 

বিনীত ছেদা এ বিষয়ে আহমেদ খানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আশিস সায়াল টাকার ব্যাগটি নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন, সেই ব্যাগ তিনি প্রীতমের বাড়িতে পৌঁছে দেবেন। এরপর আশীস আর প্রীতমের বাড়িতে যাননি, এমনকি স্টুডিওতেও ফিরে আসেননি। এমনকি তাকে ফোনেও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।

যদিও ঘটনার পর প্রীতম তার কর্মীদের কিছু সময় অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ, আশীস নামে ওই যুবক তার স্টুডিওতে গত ৭ বছর ধরে কাজ করছেন। তবে বেশ কয়েকদিন আশীসের কোনও খোঁজ না মিললে, সঙ্গীতশিল্পীর ম্যানেজার পুলিশের দ্বারস্থ হন। 

পুলিশ ইতিমদ্যেই আশিস সায়ালের আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে এবং তার মোবাইল ফোনের রেকর্ড খতিয়ে দেখে তার খোঁজ চালাচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন যে তারা সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্প্রতি কোনও জায়গা থেকে টাকা ধার করেছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাহলে এই চুরির পিছনের উদ্দেশ্য খুঁজতে সাহায্য করবে।

এই ঘটনায় মালাড পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৮১ ধারায় (কর্মচারী, চাকরদের তাদের নিয়োগকর্তার সম্পত্তি চুরি) এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছে। সেসময় স্টুডিওতে উপস্থিত অন্যান্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস

বাবা সন্তানের ওপর ছায়ার মতো স্নেহময় এক উপস্থিতি। নিঃশর্ত ভরসার প্রতীক। সন্তানের ভবিষ্যৎ গঠনের প্রয়োজনে নিজের বর্তমান, এমনকি নিজের স্বপ্নও নীরবে উৎসর্গ করে দিতে পারেন যিনি– আজ তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন। বাবা দিবস উপলক্ষে সমতা’র বিশেষ আয়োজন। গ্রন্থনা শাহেরীন আরাফাত

আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা বৃহত্তর বরিশালে। এখন সেই জায়গাটা পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি পৌরসভার সমুদয়কাঠি গ্রাম। তখনকার সামাজিক পরিসরে আমাদের পরিবারের অবস্থা সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু ভালো ছিল। আমার বাবা বিজয় কুমার আইচ তখন পিরোজপুরে কাজ করতেন। তাঁর রেশনের দোকান ছিল। প্রতি শনিবার বাড়ি আসতেন। আমরা বাবার আশায় বসে থাকতাম। এটি ছিল আমাদের জন্য একরকম আশীর্বাদের মতো।
বাবার একটি ব্যবসাও ছিল। এ থেকে মূলত আমাদের পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের চেয়ে সম্ভবত বাবার জ্ঞান বা বোধ উন্নততর ছিল। তাঁর ব্যক্তিত্বের জন্য দশ গ্রামের লোকজন তাঁকে মানত। গ্রামে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত। বাবার সঙ্গে কথা না বলে কেউ থানা-পুলিশ করতে যেত না। বাবা সবাইকে খুব বুঝিয়ে বলত– মামলা করলে কে জিতবে, কে হারবে– এটি অনেক পরের কথা। মামলা নিয়ে বরিশাল-পিরোজপুরে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে দুই পক্ষই নিঃস্ব হয়ে পড়বে। তারচেয়ে বরং তোমরা নিজেরা মিটমাট করে ফেল।
গ্রামের পণ্ডিতরা তখন তালপাতায় অ-আ-ক-খ শেখাতেন হাত ধরে ধরে। আমার সেটি একদম পছন্দ হতো না। বাবা কী করলেন, তিনি একটা স্লেট ও পেন্সিল দিয়ে ছবি আঁকতে শুরু করলেন। অ-আ-ক-খ দিয়ে যত ছবি আঁকা হয়, তা শেখাতেন। এর মধ্যে আমার যে ছবিটা পছন্দ হতো, সেটি আমি মনের মধ্যে গেঁথে নিতাম। যার ফলে বাবার মাধ্যমে অত্যন্ত আনন্দদায়ক এক শিক্ষা পেয়েছি আমি। 
আমার বাবারা ছিলেন ৪ ভাই। এর মধ্যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় দু’জন পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। আমার বাবা ও এক কাকা বাড়ি ছেড়ে যাননি। আমরা ছিলাম ৬ ভাই ৩ বোন। কাকাতো ভাই ৪ জন, বোন একজন। মোট ১৪ ভাইবোন। কাকা কম বয়সেই গত হন। বিলাসী জীবন আমাদের ছিল না। তবে গ্রামের মানুষের কাছে আমরা ছিলাম বড়লোক। পরিবারে অনেক সদস্য থাকলেও খাবারের অভাব হতো না কখনোই। এমনকি দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থায়ও খাবারের কষ্ট করতে হয়নি। আমাদের একটা গুদামঘর ছিল। সেখানে বাবা পাশের বন্দর কাউখালী থেকে সারা বছরের চাল, ডাল, পাউডার দুধ, চিনি, লবণ, গুড় এনে ড্রামে ভরে রাখতেন। বাইরে যত সংকটই থাকুক না কেন, বছরজুড়ে খাবারের অভাব হতো না। সমস্যা হতো ঝড়ের সময়। উপকূলীয় অঞ্চলে এমন ঝড় মাঝে মাঝেই আসত। কখনও ঘরের চাল উড়ে গেলে আমরা সমস্যায় পড়ে যেতাম। 
অন্যদের সামনে বাবা নিজের অবস্থানের জন্যই বেশি হাসি-তামাশা করতেন না। যখন আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তখন তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো হাসি-খুশি থাকতেন। তখনকার বাবাদের আমরা মারধর করতে দেখেছি, এমনকি খড়ম দিয়ে পেটাতে দেখেছি। বাবা আমার গালে জীবনেও একটা চড় মারেনি। কোনো ভাইবোনকেও মারধর করতে দেখিনি। তখন হয়তো আরও এমন বাবা ছিলেন। তবে গ্রামে আমি এমন বাবা আর দেখিনি। সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলেও তিনি কখনও জিজ্ঞেস করতেন না, কেন দেরি করে ঘরে ফিরেছি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলি যুদ্ধযন্ত্রকে থামাইতেই হইবে
  • বন্ধু হওয়ার সুযোগ দিন, শত্রু নয়
  • ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’
  • একদিনে আয় ৮১ লাখ, ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের তাণ্ডব!
  • ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করণীয়
  • লন্ডন বৈঠকের পর এখন বিএনপির দৃষ্টি নির্বাচনে , কী ভাবছে অন্য দলগুলো
  • সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস
  • হামলার আগে ইরানে গোপন অভিযান চালায় মোসাদ