জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত রিকশার অভাব ও অধিক ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

গত বছর ১৯ নভেম্বর অটোরিকশা দুর্ঘটনায় জাবি ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের নিহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন ২০ নভেম্বর এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন ক্যাম্পাসে চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে কিছু সংখ্যক প্যাডেল রিকশা চালু রয়েছে, যা চাহিদার তুলনার অপ্রতুল বলে জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছে ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বল্প দূরত্বের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আলবেরুনী হল, পুরাতন কলা ভবন, বিজনেস স্টাডিস অনুষদ, শহীদ সালাম বরকত হল, জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজ- এ জায়গাগুলোতে বেশি ভাড়া আদায় করার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। এছাড়া রিকশা কম থাকার সুযোগে চালকরা অধিক ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভর্তিচ্ছুরা।

ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা সুমাইয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমি ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে ডেইরি গেটে পৌঁছাই। আমার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল সিএসই ভবন। ক্যাম্পাসে এসে আমি কোন রিকশা পাচ্ছিলাম না, এছাড়া ক্যাম্পাসও চিনি না। এক পর্যায়ে আমি দ্রুত হেটে যাই এবং পরীক্ষা শুরু হওয়ার সাত মিনিট পর পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাই। ক্যাম্পাসে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে আজ আমাকে এ ভোগান্তিতে পড়তে হত না।”

ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা আরেক শিক্ষার্থী মাহমুদা বলেন, “আমরা সারারাত জার্নি করে ক্যাম্পাসে আসি।  ডেইরি গেটে নেমে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য আমরা কোন রিকশা পাচ্ছিলাম না। অনেক পরে একটা পায়ে চালিত রিকশা পেয়েছিলাম। কিন্তু তুলনামূলকভাবে তিনি আমাদের কাছা থেকে বেশি ভাড়া রেখেছেন।”

জাবি বিএনসিসির ক্যাডেট অংকুর শাহা বলেন, “আমি জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিউটি করেছি। আজ প্রতিটি শিফটে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২০ মিনিট এমনকি আধাঘন্টা পরেও অনেক শিক্ষার্থী এসেছে পরীক্ষা দিতে। দেরির কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, রাস্তায় জ্যাম ছিল এবং ক্যাম্পাসের ভিতর কোন রিকশা পাওয়া যাচ্ছিল না। এছাড়াও অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার একদম শেষ মুহূর্তে এসেছিলেন। তাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হয়নি।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।

বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।

নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ