মানুষের মস্তিষ্কে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি দ্রুত বাড়ছে, উদ্বেগে বিজ্ঞানীরা
Published: 9th, February 2025 GMT
মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যুতে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিকের খোঁজ মিলেছে বেশ আগেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিকের (এমএনপি) পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ বিষয়ে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ডিউক ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ওয়েস্ট বলেন, ‘মস্তিষ্কে এত বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাবে, তা ভাবতেই পারিনি। তবে সব তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছি যে এটি বাস্তব এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।’
গবেষণার জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মৃত্যুবরণ করা ৯১ ব্যক্তির মস্তিষ্কের টিস্যুর নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে প্রতি গ্রাম মস্তিষ্কের টিস্যুতে গড়ে ৩ হাজার ৩৪৫ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেলেও ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯১৭ মাইক্রোগ্রামে।
গবেষণার তথ্যমতে মস্তিষ্কের টিস্যুতে পাওয়া প্লাস্টিকের কণাগুলোর ধরন ও আকার এক রকম নয়। অধিকাংশ কণাই সূক্ষ্ম ও ধারালো, যা গবেষণাগারে ব্যবহৃত গোলাকার মাইক্রোপ্লাস্টিকের চেয়ে ভিন্ন। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব প্লাইমাউথের মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড থম্পসন বলেন, দৈনন্দিন ব্যবহারের বিভিন্ন সামগ্রী যেমন প্লাস্টিক ব্যাগ, পানির বোতল এবং খাদ্য মোড়ানোর প্লাস্টিক থেকেই মূলত এসব কণা এসেছে। তবে চিকিৎসা ও খাদ্যশিল্পে ব্যবহৃত পলিস্টাইরিন তুলনামূলক কম পরিমাণে মস্তিষ্কে জমা হয়েছে।
যেসব ব্যক্তির মস্তিষ্কের টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব বেশি ছিল, তাদের মধ্যে ১২ জন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো প্লাস্টিক কণার সঙ্গে স্নায়ুরোগের সরাসরি কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাননি। ধারণা করা হচ্ছে যে ডিমেনশিয়ার ফলে মস্তিষ্কের টিস্যুতে প্লাস্টিক জমার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বাতাস, পানি ও খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করা প্লাস্টিক কণাগুলো কীভাবে মস্তিষ্কে পৌঁছে যাচ্ছে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হতে পারে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর তাই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখার পাশাপাশি সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে।
সূত্র: গ্যাজেটস ৩৬০
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল
বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষ অবস্থানটি দক্ষিণ কোরীয় ব্যবসায়ী কিহাক সাংয়ের মালিকানাধীন ইয়াংওয়ান করপোরেশনের। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশীয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদের মালিকানাধীন হা-মীম গ্রুপ।
ইয়াংওয়ান ও হা-মীম ছাড়াও রপ্তানিতে সেরা দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা বাকি আট শিল্প গ্রুপ হচ্ছে মণ্ডল গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, অনন্ত, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, পলমল গ্রুপ, প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ ও মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ।
সেরা দশে থাকা নয়টি শিল্প গ্রুপের রপ্তানির ৯০ থেকে ১০০ শতাংশই তৈরি পোশাক। এই তালিকায় ব্যতিক্রম শুধু প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে শুরু করে জুতা, আসবাব, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল পণ্য—প্রায় সবই আছে শিল্প গ্রুপটির রপ্তানির তালিকায়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রপ্তানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের শীর্ষ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর এই তালিকা তৈরি করেছে। এনবিআরের পরিসংখ্যান থেকে স্থানীয় বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানির হিসাব নেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট ৪৬ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ দশ গ্রুপের সম্মিলিত রপ্তানির পরিমাণ ৫ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১১ শতাংশ।
গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক শিল্পগোষ্ঠী