নরসিংদীর শিবপুরে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার এক ব্যক্তির সঙ্গে থানা-হাজতে কথা বলতে না দেওয়ায় কনস্টেবলের গালে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবপুর থানা কমপ্লেক্সে হাজতখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এরপরেই অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।

আটক ব্যক্তির নাম আবিদ হাসান ওরফে জজ মিয়া। তিনি শিবপুরের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব ও মাছিমপুর ইউনিয়নের পুবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও একাধিক মামলার আসামি জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাদিম সরকার গতকাল সন্ধ্যায় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার হন। তাঁকে ছাড়ানোর তদবির করতে দলবল নিয়ে গতকাল রাত ১০টার দিকে থানায় যান আবিদ হাসান। থানাহাজতের সামনে দাঁড়িয়ে গ্রেপ্তার নাদিমের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন তিনি। ‘জেলহাজতে দীর্ঘ সময় এভাবে কথা বলার সুযোগ নেই’ জানিয়ে আবিদকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন কর্তব্যরত কনস্টেবল মো.

সবুজ মিয়া। ওই সময় আবিদ উত্তেজিত হয়ে সবুজের গালে থাপ্পড় মারেন।

এ বিষয়ে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, থানায় এসে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে আবিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কনস্টেবল সবুজ। ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে, মামলা হওয়ার পর তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ