মাইকে ঘোষণা দিয়ে যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ইউনিয়নের বড় হৈবতপুর গ্রামে সংঘর্ষটি হয় বলে জানান যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল।

আহতরা হলেন- রাজু (৪৪), শামীম (৩৬), জিয়া (৩৫) এবং পাপ্পু। 

আরো পড়ুন:

দুই দফা সংঘর্ষ শেষে শান্ত আইডিয়াল ও সিটি কলেজ

বগুড়ায় বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৩

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চুরামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দাদের চাষাবাদের জমি রয়েছে হৈবতপুর ইউনিয়নের বড় হৈবতপুর গ্রামে। যাদের জমি রয়েছে বড় হৈবতপুর গ্রামে তাদের মধ্যে রয়েছেন চুরামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বর ও আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আনিছুর নিজের জমিতে সেচের পানি দিতেন। তিনি হৈবতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির আইল কেটে দিতেন। আজ সকালে অন্যের সেচ কাজের পানি নিজের জমিতে নিতে আইল কেটে দেন আনিছুর ও তার লোকজন। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে আনিছুর গ্রামের এলাকার মসজিদের দুইটি মাইকে ঘোষণ দিয়ে লোকজন ডাকেন। অন্যদিকে, বড় হৈবতপুর গ্রামবাসীও চলে আসেন। 

এসময় দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন যুবদল নেতা রাজু। দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসাও হয়ে যায়। যখন বড় হৈবতপুরের লোকজন ফিরে যাচ্ছিলেন তখন আনিছুরের নেতৃত্বে শফিক, তৌহিদ এবং রমজানসহ অন্যরা বড় হৈবতপুরের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। ফলে গুরুতর আহত হন চারজন। পরে বড় হৈবতপুরের লোকজন এগিয়ে এলে আনিছুরের লোকজন চলে যায়। পরে স্থানীয়রা পাপ্পু বাদে অন্যদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 

হৈবতপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‍“আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আনিছুর মেম্বার যা ইচ্ছে তাই করেছেন। গড়ে তুলেছিলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, হৈবতপুরের মাঠ থেকে সাধারণ মানুষের ফসল তুলে নিযে যাওয়া, অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিসহ নানা ধরণের অপকর্ম সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন হৈবতপুরবাসী। থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে। সরকার পতনের পর থেকে আনিছুর চক্র আত্মগোপন করে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আনিছুরের বাহিনী।”

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার মিঠুন কুমার বলেন, “আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় কয়েকটি ক্ষত রয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।”

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।”

যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা বলেন, “আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ফের সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর ওপর হামলা হয়েছে।” 

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত র র ল কজন স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ