বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে যে বৈষম্য চলে আসছে সে বৈষম্য শুধু প্রাণের বিনিময়ে দুর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আজকে আমরা যে বৈষম্যের কথা বলছি- যে আন্দোলনের জন্য মানুষ জীবন দিল, যে দাবিতে যে তাগিদে মানুষ প্রাণ দিয়েছে সেটা আগামীকাল অর্জিত হবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। অনেকেই আশাহত হচ্ছেন- এতো প্রাণ গেল, এতো কিছু হলো, কই বৈষম্য তো কমছে না। যে বৈষম্য বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ কাঠামোগতভাবে তৈরি হয়েছে, প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাকে স্থায়ী করা হয়েছে, তা কেবলমাত্র প্রাণের বিনিময়ে সবগুলো অবিলম্বে অর্জন করতে পারবো, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, তবে আমরা প্রত্যেকে দায়িত্ববোধের দিক থেকে আমাদের আচরণ দিয়ে, জ্ঞান দিয়ে, চর্চা দিয়ে একটু একটু করে তা গ্রাস করতে পারবো। সবমর্মিতা (সম্মান) বোঝার অনুভূতি তৈরি করতে পারি এবং ভিন্নমতের সত্ত্বেও একটি টেবিলে বসতে পারি, তাহলেই আমরা পারবো।

ওরিয়েন্টশনে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর প্রফেসর ড.

এস এম আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজিম আখন্দ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ