কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিজ বসতঘর থেকে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ভৈরব পৌর শহরের তাতারকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই কিশোরীর নাম জিমা বেগম (১৪)। সে একই এলাকার মিঠু মিয়া ও মুক্তা বেগম দম্পতির মেয়ে। তার পরিবারের ধারণা, মায়ের বকুনি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে জিমা।

পরিবারের সদস্যরা জানান, জিমার বাবা রাজধানী ঢাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন। আর মা মুক্তা বেগম স্থানীয় একটি হাসপাতালে চাকরি করেন। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে জিমা দ্বিতীয়। তাঁর দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আছে। বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই জিমার সঙ্গে মায়ের কথা-কাটাকাটি হতো। আজ সকালে একই অবস্থা দেখে মুক্তা বেগম ক্ষুব্ধ হয়ে জিমাকে বকা দেন। এর একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে মুক্তা সকাল ৯টার দিকে অফিসে চলে যান। সেখানে সকাল ১০টার দিকে তিনি খবর পান, জিমার নিথর দেহ নিজ বসতঘরের বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা জিমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

জিমার মা মুক্তা বেগম বলেন, ‘ঘুম থেকে ওঠার জন্য বকা দেওয়া ছাড়া মেয়ের সঙ্গে আর কিছুই হয়নি। বকার কারণে মেয়ে আত্মহত্যা করবে জানলে জীবনেও বকা দিতাম না।’

খবর পেয়ে আজ দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে জিমার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, ‘মূলত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোন করে তথ্যটি জানিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে কিশোরীর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে বসতঘরে ঝুলছিল মা-মেয়ের লাশ

নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত দুজন হলেন রাবেয়া বসরী (২৩) ও তাঁর চার বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম। উদ্ধারের পর লাশ দুটি সুধারাম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাবেয়া বসরীর স্বামী আবদুর রহমান ওরফে রুবেল (৩৮) পেশায় কসাই। রাবেয়া তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে রাবেয়াকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

কাদিরহানিফ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুর রহিম নিহত রাবেয়ার স্বামী আবদুর রহমানের বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আবদুর রহমান তাঁর ছোট বোনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর মেয়ে জান্নাতুল ও স্ত্রী রাবেয়া বসরীর লাশ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। তিনি চিৎকার দিলে পাশের ঘর থেকে তাঁর ভাইসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তিনিও (ইউপি) ওই বাড়িতে যান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লন্ডন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মা ও মেয়ের লাশ পৃথক দুটি রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছেন। স্বামীর দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি দেড়টার দিকে ছোট বোনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফিরে এসে দেখেন ঘরের কাপড়চোপড় এলোমেলো, কক্ষের ভেতর তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীর লাশ ঝুলছে। তখন চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন।

এসআই লন্ডন চৌধুরী জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য স্বামী আবদুর রহমানকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে মা-মেয়ের মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কলাপাড়ায় বসতঘর থেকে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • বৈদ্যুতিক মিটার বিস্ফোরণের পর ১১ বসতঘরে আগুন
  • নোয়াখালীতে বসতঘরে ঝুলছিল মা-মেয়ের লাশ