ফেনীতে ২ দিনে আ.লীগের ১৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
Published: 12th, February 2025 GMT
ফেনীতে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান চালিয়ে গত দুইদিনে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের বিভিন্ন মামলায় সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানায়, গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বাহুবল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে ‘কাপল ডান্স পার্টিতে’ অভিযান, আটক ২৫
অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলার বাদুরিয়া গ্রামের ইব্রাহিম সওদাগরের ছেলে মো.
এর আগে সোমবার ৯ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী মো. ইসমাঈল (৩০), দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান (২৪), ফেনী সদর উপজেলা মোটবী ইউনিয়নের মধ্যম লক্ষীপুর গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী সাজ্জাদ আহাম্মদ সায়েম (২৩), ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ফাহিম (১৯), সোনাগাজী উপজেলার সোনাপুর গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী আজিজুর রহমান তসলিম (২৮), সোনাগাজী উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মো. মাইন উদ্দিন (২১), দাগনভূঞার রাজাপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা মো. খাজা মাইনউদ্দিন চিশতী (৫৫), জায়লস্কর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান (৬০) ও দাগনভূঞা পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু নাসের (৬২)।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, “জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। তাদের সন্দেহজনক আসামি হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ সদর উপজ ল উপজ ল র ম উপজ ল র ব ন ত কর ম দ গনভ ঞ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫