ফেনীতে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান চালিয়ে গত দুইদিনে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের বিভিন্ন মামলায় সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ সূত্রে জানায়, গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

বাহুবল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে ‌‌‘কাপল ডান্স পার্টিতে’ অভিযান, আটক ২৫

অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলার বাদুরিয়া গ্রামের ইব্রাহিম সওদাগরের ছেলে মো.

ইউনুছ (৪৫), একই উপজেলার মান্দারী গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে মাবুল হক (৬৭), ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম দেবপুর গ্রামের মৃত হাজী সেরাজুল হকের ছেলে ওবায়দুল হক (৭০), সদর উপজেলার মালিপুর গ্রামের হাবিবুল্লাহ ছেলের অহিদুল্লাহ শিপন মেম্বার (৪০), দাগনভূঞা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের সেকান্দপুর গ্রামের সুলতান মুন্সির ছেলে আলাউদ্দিন (৪৭), ফেনী পৌরসভার রামপুর এলাকার মো. মহসিনের ছেলে নাইমুল হাসান নাঈম, সদর উপজেলার শশর্দী ইউনিয়নের মধ্যম জাহানপুর গ্রামের মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৪০), একই উপজেলার মধ্যম চাড়িপুর গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে গোলাম রসুল ছোটন (৩৬), পরশুরাম উপজেলার বক্সমাহমুদ মোহাম্মদপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ (৪৮) ও সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের মৃত মো. মোস্তফার ছেলে বাহার উল্যাহকে (৪৮)। 

এর আগে সোমবার ৯ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী মো. ইসমাঈল (৩০), দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান (২৪), ফেনী সদর উপজেলা মোটবী ইউনিয়নের মধ্যম লক্ষীপুর গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী সাজ্জাদ আহাম্মদ সায়েম (২৩), ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ফাহিম (১৯), সোনাগাজী উপজেলার সোনাপুর গ্রামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী আজিজুর রহমান তসলিম (২৮), সোনাগাজী উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মো. মাইন উদ্দিন (২১), দাগনভূঞার রাজাপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা মো. খাজা মাইনউদ্দিন চিশতী (৫৫), জায়লস্কর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান (৬০) ও দাগনভূঞা পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু নাসের (৬২)।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, “জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। তাদের সন্দেহজনক আসামি হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ সদর উপজ ল উপজ ল র ম উপজ ল র ব ন ত কর ম দ গনভ ঞ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ