কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার চরে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী বাহিনী। গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার বৈরাগীর চর এলাকায় রাজু হোসেন (১৮) নামের এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একই রাত ও পরদিন রাতে আবেদের ঘাট ও বৈরাগীর চর এলাকার পদ্মার চরে অন্তত শতাধিক গরু ও মহিষ লুটের অভিযোগ উঠেছে এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন চরাঞ্চলে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কে রাখছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাতে মরিচা ইউনিয়নের রাজু হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পদ্মার চরে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই রাতে মরিচা এলাকার শহিদ মন্ডলের বাথান থেকে অন্তত ৫০টি মহিষ ও ১৫টি গরু লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা রাখাল মাজদার আলী, কামাল হোসেন ও  সৈকতকে বেধড়ক মারপিট করে ও অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী রহিমপুর মাঠে নিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাখালদের উদ্ধার করলেও লুট হওয়া গরু-মহিষ উদ্ধার করতে পারেনি।

এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ফিলিপনগর ইউনিয়নের আবেদের ঘাট এলাকায় কালু কবিরাজের বাথান থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৪টির বেশি গরু লুট করা হয়। এ ছাড়া চরাঞ্চলের আরও কয়েকটি বাথানে গরু-মহিষ লুটের ঘটনা ঘটেছে।

গরু-মহিষ লুটের ঘটনায় শহিদ মন্ডলের স্ত্রী তমা খাতুন পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তিনি মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অন্যদিকে ফিলিপনগর ইউনিয়নের কালু কবিরাজ জানান, তার বাথানে গভীর রাতে অস্ত্রধারীরা হামলা চালায় এবং রাখালদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গরুগুলো লুট করে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘‘কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা বললে আমাকে গুলি করে মেরে ফেলবে।’’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর লালচাঁদ বাহিনীর সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্থানীয় কিছু অস্ত্রধারী।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘আমি কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত নই। কিছুদিন ধরে এলাকায় অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বেড়েছে। তারা রাতে পদ্মার চরে ঘুরে বেড়ায়। এরই মধ্যে আমার ভাতিজা রাজু খুন হয়েছে। এসব অস্ত্রধারীরা গরু-মহিষ লুট করেছে।’’

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘গরু-মহিষ লুট ও রাখালদের অপহরণ করা হয়েছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েক জন রাখালকে উদ্ধার করেছে।’’

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘‘একটি হত্যাকাণ্ডের পর পদ্মার চরাঞ্চলে গরু-মহিষ লুটের খবর পেয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী সক্রিয় হলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের দমন করা হবে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ট কর

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় বছর ধরে নিখোঁজের পর ফেনীতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার, সেই আহাদ আসলে কে
  • দেশে পাঙাশের বৃহত্তম আড়ত দ্বীপনগর, পাওয়া যায় দেশি-বিদেশি অনেক মাছ
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক