ইউটিউবে ভিডিও জনপ্রিয় করার কৌশল শিখলেন নির্মাতারা
Published: 13th, February 2025 GMT
অনলাইনে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এখন ইউটিউব। ভিডিও দেখার পাশাপাশি ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়ত্ত করছেন অনেকে। তবে ইউটিউবে দীর্ঘদিন ভালোমানের ভিডিও প্রকাশ করলেও সেগুলোর দর্শকসংখ্যা (ভিউ) বেশি হয় না অনেকের। কিন্তু কেউ আবার একটি বা দুটি ভিডিও প্রকাশ করেই রাতারাতি ইউটিউব তারকায় পরিণত হয়ে যাচ্ছেন। আর তাই বাংলাদেশের ভিডিও কনটেন্ট বা আধেয় নির্মাতাদের ইউটিউবে ভিডিও জনপ্রিয় করার কৌশল শেখাতে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। ‘ইউটিউব অ্যাকাডেমি ১.
বুটক্যাম্পে জানানো হয়, বাংলাদেশে ১০ হাজার গ্রাহক বা সাবস্ক্রাইবার থাকা ইউটিউব চ্যানেলের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। বাংলাদেশ থেকে অনেক ইউটিউব নির্মাতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাড়া ফেলেছেন। উদীয়মান নির্মাতাদের বৈশ্বিক দর্শককে আকর্ষণ করার কৌশল শেখানোর পাশাপাশি ভিডিও জনপ্রিয় করার বিভিন্ন পদ্ধতি শেখাতে এই বুটক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীদের কার্যকর ভিডিও তৈরির কৌশল, ভিডিও প্রকাশের নানা ধরন থেকে শুরু করে অ্যানালাইটিকস ব্যবহারের কৌশল হাতে–কলমে শেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুনইউটিউবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ চ্যানেলের নাম জানেন কি১৪ অক্টোবর ২০২৪বুটক্যাম্পে বক্তব্য দেন জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতা ফারজানা আক্তার (ফারজানা ড্রয়িং একাডেমি), লিটন আলী খান (ভিলেজ গ্র্যান্ডপাস কুকিং), ওমর সানি সম্রাট (এসএস ফুড চ্যালেঞ্জ), রাফসান (দ্য ছোট ভাই) ও নাফিস সেলিম। তাঁরা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ভিডিও তৈরির গল্প ও নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। ফারজানা ড্রয়িং একাডেমির নির্মাতা ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমি নিজের আগ্রহের বিষয়টি ইউটিউবে তুলে ধরার চেষ্টা করতে থাকি। ধীরে ধীরে দর্শকেরা আমার চ্যানেলে ভিড় জমাতে থাকেন। ২০১৬ সালে শুরু করা আমার চ্যানেলটিতে বর্তমানে ১ কোটি ৫৩ লাখ সাবস্ক্রাইবার রয়েছেন।’ ভিলেজ গ্র্যান্ডপাস কুকিংয়ের নির্মাতা লিটন আলী খান বলেন, ‘আমি আমার গ্রামের তরুণদের কিছু অর্থ আয়ের জন্য ভিডিও নির্মাণ শুরু করি। আমার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১৯ লাখ ৫০ হাজার।’
আরও পড়ুনইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করার ৭ কৌশল১৪ জানুয়ারি ২০২৩জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতা রাফসান দ্য ছোট ভাই প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক ক্রিয়েটরের সঙ্গে আমি পরিচিত, যাঁরা রাজধানী ঢাকায় থাকেন। আজকের বুটক্যাম্পে আমি এমন সব নির্মাতার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি যাঁরা ক্যামেরার সামনে আসেন না, কিন্তু তাঁদের ভিডিওর দর্শক বিশ্বের নানা প্রান্তে রয়েছেন। তাঁদের তৈরি ভিডিওর নির্মাণশৈলী আর মানের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শকেরা তাঁদের কনটেন্ট সাদরে গ্রহণ করছেন। আমাদের দেশের নির্মাতারাও বিশ্বমানের কনটেন্ট তৈরি করছেন।’
আরও পড়ুনভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এক বছরে ইউটিউবের আয় কত০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইউটিউব ইন্ডিয়া, সাউথ এশিয়া অ্যান্ড ইমার্জিং মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অজয় বিদ্যাসাগর বুটক্যাম্প সম্পর্কে বলেন, ইউটিউব বাংলাদেশি নির্মাতাদের উৎসাহিত করার জন্য কাজ করছে। এই বুটক্যাম্প স্থানীয় নির্মাতাদের দক্ষতা বাড়াতে একটি টেকসই প্রচেষ্টার সূচনা। আমরা বাংলাদেশের নির্মাতাদের বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে আসার জন্য সুযোগ তৈরি করতে পেরে আনন্দিত।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কনট ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?