বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ধনকুবের ইলন মাস্কের ফোনালাপ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে তাঁদের মধ্যে ফোনে কথা হয়।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দিয়েছেন। এই বিভাগের মাধ্যমে সরকারি ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে কাজ করবেন মাস্ক। বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক টেসলা, স্পেসএক্স ও এক্সের (টুইটার) মালিক।

অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে মাস্কের ফোনালাপে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ফোনালাপ নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টও দিয়েছেন উপ–প্রেস সচিব। সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্কের ফোনালাপ হয়েছে। আলোচনার বিস্তারিত যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে।’

অধ্যাপক ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দিয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির বক্তব্য একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে

দেশের চলমান সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে শ্রমিকসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে সংস্কার নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছি, ইসি কিছু বিষয়ে দ্বিমত জানাচ্ছে; ইসির বক্তব্য একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তারা একটি বিশেষ দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার আয়োজন করছে বলে মনে হচ্ছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে ‘মে দিবসের আহ্বান ও ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের প্রেরণায়: নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে শ্রমিকের ন্যায্য হিস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন সারোয়ার তুষার। এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলের শ্রমিক উইং।

নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন এবং ইসি সংস্কার করতে হবে উল্লেখ করে সারোয়ার তুষার বলেন, সংশয় তৈরি হয়েছে যে এই ইসি আসলে কার ইসি, এই ইসি আসলে কী চায়। এই ইসি দ্বারা আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে কি না, প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যে আইন, যে বিধান দ্বারা এই ইসি পরিচালিত হয়, এই বিদ্যমান আইন এবং এই বিদ্যমান বিধানে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ফলে আগামী নির্বাচনের আগেই ইসির সংস্কার করাটা সবচেয়ে জরুরি।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থায় শ্রমিকদের ‘দাস’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁদের কোনো স্বাধীন সত্তা নেই। তাঁদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কখনো ১২ ঘণ্টা শ্রমের বিনিময়ে যে সামান্য অর্থ দেওয়া হয়, তাতে জীবনধারণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি, নাগরিকের মুক্তি, শ্রমিকের মুক্তির জন্য আমাদের সুস্পষ্টভাবে কাজ করতে হবে এবং সেটাই হবে আগামী নতুন বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মুক্তি এবং নতুন বন্দোবস্ত।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ চলমান সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সংস্কারের মাধ্যমে শুধু কোনো একক দল যেন সুবিধা না পায়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের প্রতিটি স্তর বঞ্চিত হয়েছি। ৪৭–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৭১–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৯০–পরবর্তী সময়ে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। সর্বশেষ আমরা ২০২৪–এ এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের মাথায় রাখতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের দায় রয়েছে।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশের পোশাক খাতে একটি মালিকবান্ধব ব্যবস্থা দাঁড় করানো হয়েছে। এখানে শ্রমিকদের শোষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, অচিরেই এ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। শ্রমিক অঞ্চল থেকে বিপ্লব গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের বিদ্যমান এ অবস্থায় রাখতে চায় না। বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এনসিপি শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে এবং তাদের পাশে থাকবে।

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের সংগঠক রহমতউল্লা রবিন নিহালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক রিয়াজ মোর্শেদ, দলের শ্রমিক উইংয়ের যুগ্ম সমন্বয়ক শাহ আলম, আল আমিন, সজিব ওয়াফি, আবু আবদুল্লাহ, সদস্য ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ