ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ দিনের তারুণ্যের উৎসব শেষ হলো
Published: 13th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’ শেষ হয়েছে। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই উৎসব আয়োজন করে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান সফলভাবে উৎসব আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলতে তারুণ্যের উৎসবের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘তরুণসমাজের শক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য আমরা দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব উদ্যাপন করছি। যুবসমাজকে সংগঠিত করা এবং আমাদের সক্ষমতা বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে এই উৎসব উদ্যাপিত হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ হিসেবে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
তিন দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লিন ক্যাম্পেইন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কেস কমপিটিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে মেগা কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের বিতর্ক দল ‘অ্যাসেম্বলি অব ডিবেটরস’ চ্যাম্পিয়ন এবং মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাব রানারআপ হয়।
কেস কমপিটিশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘টিম হার্নেস জিরো’ চ্যাম্পিয়ন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দল ‘টিম সি জিরো’ রানারআপ হয়। এতে দ্বিতীয় রানারআপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি দল ‘টিম ট্রাইনোভিয়া’।
দাবা প্রতিযোগিতার পুরুষ ইভেন্টে নাজির জামান প্রথম স্থান, ইমরান আহমেদ দ্বিতীয় স্থান এবং মাহিম রেজা তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
নারী ইভেন্টে ফারিহা সুমনা প্রথম, সংগীতা ভৌমিক দ্বিতীয় ও মেহনাজ ইসলাম তৃতীয় স্থান লাভ করেন। এ ছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ফরহাত আলী প্রথম স্থান, রাকিন নাওয়াড় দ্বিতীয় স্থান এবং প্রশান্ত মন্ডল তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ণ য র উৎসব অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে। তাই আজ রোববার আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে নাচ-গান-আবৃত্তিতে বরণ করে নেওয়া হলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ সকালে ‘বর্ষা উৎসব ১৪৩২’ আয়োজন করা হয়। আয়োজক বর্ষা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ।
সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে শিল্পী সোহানী মজুমদারের সেতারবাদনে ‘আহির ভৈরব’ রাগ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আয়োজনে বর্ষা নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন শিল্পী। ইয়াসমিন মুশতারি ‘রিম্ ঝিম্ ঘন ঘন রে বরষে’, সালাউদ্দিন আহমেদ ‘বরষা ঐ এলো বরষা’, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ‘শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না’, নবনীতা জাইদ চৌধুরী ‘শ্যামা-তন্বী আমি মেঘ-বরণা’, অনিমা রায় ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’, শামা রহমান ‘মেঘের ’পরে মেঘ জমেছে, আঁধার করে আসে’, মকবুল হোসেন ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে’, ফেরদৌসী কাকলি ‘গহন রাতে শ্রাবণধারা পড়িছে ঝরে’ পরিবেশন করেন।
বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানিরে’ লোকসংগীত গেয়ে শোনান। শ্রাবণী গুহ রায় বিখ্যাত ‘কে যাস রে ভাটির গাঙ বাইয়া’ গানটি করেন।
আবৃত্তি করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, আহসান উল্লাহ তমাল। আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যের কোলাজ পরিবেশন করে শিল্পবৃত্ত।
বর্ষা উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট ঘোষণা পাঠ করেন। ঘোষণায় বলা হয়, ষড়্ঋতুর দেশে বাংলার জীবনধারা পাল্টে যাচ্ছে দ্রুত। সেই সঙ্গে বদলে যাচ্ছে ঋতুর চরিত্র। গ্রীষ্ম হয়ে উঠছে খরতর, বর্ষা অনেক রুষ্ট এলোমেলো, শীত একাধারে নরম ও চরম, বসন্ত ক্ষীয়মাণ। প্রকৃতির ওপর মানুষের সীমাহীন অনাচার জন্ম দিয়েছে বিশ্বজনীন সংকটের। ভূপৃষ্ঠ হয়েছে তপ্ততর, সমুদ্রজল স্ফীত, ওজন–বলয় ক্ষতিগ্রস্ত। আধুনিক জীবনযাত্রা গড়ে তুলছে অপচয়ের পাহাড়। মাটি খুঁড়ে প্রকৃতির সম্পদ গোগ্রাসে গিলছে মানুষ। প্রয়োজনের সীমানা ছাপানো অপ্রয়োজনের ভারে পিষ্ট ও বিপন্ন আজকের পৃথিবী। সভ্যতার দন্ত ও প্রকৃতির ঔদায়ের মধ্যে বৈরিতা মানব অস্তিত্বের জন্য তৈরি করছে হুমকি। প্রকৃতি আজ মানবের কাছে দাবি করছে সংবেদনশীলতা ও সহমর্মিতা। জীবনযাপন ও প্রকৃতির মধ্যে সমঝোতা তৈরি ছাড়া মানবের মুক্তির ভিন্ন পথ নেই।
মানজার চৌধুরী বলেন, ‘অনন্তকালের বাণী নিয়ে আজকের বর্ষাবন্দনায় আমরা মুখর হই গীতি-কবিতা-নৃত্য ছন্দে, প্রকৃতির সঙ্গে মানবের মিলনের প্রত্যয় নিয়ে। বর্ষার মিলনপিয়াসী মানস আমাদের সচকিত করে মানবসমাজে সৃষ্ট ঘৃণা–বিদ্বেষ সংঘাত রোধে, প্যালেস্টাইনে, দেশে দেশে, স্বদেশে। বর্ষার জলধারায় সিক্ত হোক সবার জীবন, হোক আনন্দময় ও কল্যাণব্রতী।’
অনুষ্ঠানে ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।