ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’ শেষ হয়েছে। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই উৎসব আয়োজন করে।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

উৎসব উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান সফলভাবে উৎসব আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলতে তারুণ্যের উৎসবের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘তরুণসমাজের শক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য আমরা দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব উদ্‌যাপন করছি। যুবসমাজকে সংগঠিত করা এবং আমাদের সক্ষমতা বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে এই উৎসব উদ্‌যাপিত হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ হিসেবে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো. সাইফুজ্জামান। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিন দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লিন ক্যাম্পেইন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কেস কমপিটিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে মেগা কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের বিতর্ক দল ‘অ্যাসেম্বলি অব ডিবেটরস’ চ্যাম্পিয়ন এবং মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাব রানারআপ হয়।

কেস কমপিটিশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘টিম হার্নেস জিরো’ চ্যাম্পিয়ন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দল ‘টিম সি জিরো’ রানারআপ হয়। এতে দ্বিতীয় রানারআপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি দল ‘টিম ট্রাইনোভিয়া’।

দাবা প্রতিযোগিতার পুরুষ ইভেন্টে নাজির জামান প্রথম স্থান, ইমরান আহমেদ দ্বিতীয় স্থান এবং মাহিম রেজা তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

নারী ইভেন্টে ফারিহা সুমনা প্রথম, সংগীতা ভৌমিক দ্বিতীয় ও মেহনাজ ইসলাম তৃতীয় স্থান লাভ করেন। এ ছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ফরহাত আলী প্রথম স্থান, রাকিন নাওয়াড় দ্বিতীয় স্থান এবং প্রশান্ত মন্ডল তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ণ য র উৎসব অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন

বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী তিন দিনের রাস উৎসব। পূর্ণিমার তিথিতে পুণ্যস্নান ও পূজার মধ্য দিয়ে এই উৎসব উদ্‌যাপন করা হয়। এরই মধ্যে সাগরতীরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে এবারও রাস উৎসবে কোনো মেলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না।

রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে সুন্দরবনে প্রবেশে কড়া বিধিনিষেধ জারি করেছে বন বিভাগ। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরাই বন বিভাগের নির্ধারিত পাঁচটি রুট দিয়ে আলোরকোলে যেতে পারবেন। অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী বা পর্যটকের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

খুলনার কয়রা উপজেলার কোবাদক ফরেস্ট স্টেশন থেকে আজ সকালে ৩০ জনের একটি পুণ্যার্থী দল রওনা হয় দুবলার চরের উদ্দেশে। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা। তিনি বলেন, ‘৩৫ হাজার টাকায় ট্রলার ভাড়া করেছি। তিন দিনের বাজার-সদাই সব সঙ্গে নিয়েছি। ট্রলারেই রান্না ও খাওয়া চলবে। সবাই আনন্দ নিয়ে যাচ্ছেন। ভালোভাবে ফিরে এলেই আমাদের সফলতা।’

কয়রার মহারাজপুর এলাকার পুণ্যার্থী মনজিত কুমার রায় বলেন, ‘সুন্দরবনের বাটুলা নদী পেরিয়ে দুবলার চরের দিকে যাচ্ছি। কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইলে (মুঠোফোন) নেটওয়ার্ক থাকবে না। তবে সবাই খুব আনন্দে আছে। পূর্ণিমায় জোয়ারের নোনাজলে স্নান করলে পাপমোচন হয় এই বিশ্বাস নিয়েই যাচ্ছি।’

কয়রার গুড়িয়াবাড়ী গ্রামের সুব্রত কুমার মণ্ডল বলেন, এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। মাঝারি আকারের ট্রলার ভাড়া করেছেন তিন দিনের জন্য। বাজার-সদাই সব করে সকালে রওনা দিয়েছেন ২০ জন পুণ্যার্থী নিয়ে।

রাস উৎসব উদ্‌যাপন কমিটি ও দুবলার চর ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘তিথি অনুযায়ী আজ থেকে পূজা শুরু হচ্ছে। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে আলোরকোলে রাধা-কৃষ্ণের অস্থায়ী মন্দির তৈরি করা হয়েছে। ৫ নভেম্বর ভোরে সাগরের প্রথম জোয়ারে পুণ্যস্নান শেষে পুণ্যার্থীরা ফিরে যাবেন। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, এ বছর শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরাই অংশ নিতে পারবেন। পর্যটকদের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুণ্যার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য পাঁচটি নির্ধারিত রুটে টহল দল মোতায়েন আছে। সবার জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে এবং চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও নৌযান থামানো যাবে না। এ বছরও রাস উৎসব উপলক্ষে কোনো মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

রাস উৎসবের ইতিহাস সম্পর্কে জানান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কয়রা উপজেলা সভাপতি অরবিন্দ মণ্ডল। তিনি বলেন, উনিশ শতকের শুরুর দিকে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী সাধু হরিভজন প্রথম দুবলার আলোরকোলে রাস পূর্ণিমার পূজা শুরু করেন। তিনি তাঁর ভক্তদের নিয়ে সাগরে পুণ্যস্নান করতেন। পরে ধীরে ধীরে এই ধর্মীয় পূজাই লোকসমাগমের মাধ্যমে এক বৃহৎ রাসমেলায় পরিণত হয়। তবে ২০১৭ সাল থেকে বন বিভাগের সিদ্ধান্তে মেলার আয়োজন বন্ধ রয়েছে।

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন বলেন, অতীতে কিছু পুণ্যার্থী বা জেলের ছদ্মবেশে হরিণশিকারিরা বনে ঢোকার সুযোগ নিতেন, তাই এবার উৎসব চলাকালীন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেলে, পর্যটক ও সাধারণ মানুষের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে গত শনিবার রাতে সুন্দরবনের গহিনে ট্রলারে বন বিভাগের পতাকা লাগিয়ে হরিণ শিকারের চেষ্টা করার সময় সাতজনকে আটক করেছেন বনরক্ষীরা। তাঁদের কাছ থেকে ১০০টি ফাঁদ, ২টি ট্রলার, ১টি বন বিভাগের পতাকা ও ৪টি মাংস রান্নার পাতিল জব্দ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহিদনগর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে বাবুলের উঠান বৈঠক
  • কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • রাজধানীর দক্ষিণখানে নিজ বাসা থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
  • নির্বাচনের আগে একটি দল জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব