মা ও মামার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার সময় গ্যাসের আগুনে শিশুর মৃত্যু
Published: 14th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেওয়ার সময় প্রাইভেটকারে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় রংধনু সিএনজি ফিলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনেরা ফিলিং স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়েছে।
নিহত শিশুটির নাম মো.
জিহানের স্বজনেরা জানান, বিকেলে শিশুটিকে নিয়ে তার মা ও মামা নরসিংদীতে খালার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। রূপসী থেকে তাঁরা একটি প্রাইভেটকারে করে রওনা হন। পথে কর্ণগোপ এলাকায় রংধনু ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেওয়ার জন্য প্রাইভেটকারের চালক থামেন। গ্যাস নেওয়ার সময় শিশুটির মা ও মামা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। তখন গাড়ির ভেতরে ছিল শিশুটি। গ্যাস নেওয়ার সময় হঠাৎ প্রাইভেটকারটিতে আগুন লাগে। মুহূর্তেই ওই আগুন ছড়িয়ে পড়লে প্রাইভেটকারের ভেতরেই আগুনে পুড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুজন প্রথম আলোকে জানান, আগুন লাগার পর প্রথমে ফিলিং স্টেশনের লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে স্টেশনের কর্মরত লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যান।
এদিকে শিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ফিলিং স্টেশনটি ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার সময় প্রাইভেটকারে আগুন লেগে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত জিহানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব