ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুরের নগরকান্দায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এম এম পরিবহনের একটি বরযাত্রীবাহী বাস সড়কের পাশে খাদে পড়ে অন্তত ৪০ জন যাত্রী আহত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বরিশাল থেকে ৩টি বাস ও একটি মাইক্রোবাস ভর্তি প্রায় ২২০ জন বরযাত্রী নিয়ে নিজ বাড়ি রাজবাড়ীর বিনতপুরে ফিরছিল। পথিমধ্যে ৫০ জন বরযাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৪০ জনের মতো আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শবে বরাতে নামাজ শেষ করে বের হলে হঠাৎ প্রচণ্ড আওয়াজ শুনে দৌড়ে এসে দেখেন যাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পরে উল্টে আছে, তখন বাস ভর্তি যাত্রী ছিল। তারা দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশকে খবর দেন। কালক্ষেপণ না করে দ্রুত বাসের ভিতর আটকা থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে থাকেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ এসে বাকি আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। 

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের এস আই মামুন জানান, এম এম পরিবহনের বরযাত্রীবাহী বাসটি রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। মূলত বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে বরযাত্রীবাহী বাসটি বরিশাল থেকে ছেড়ে এসে রাজবাড়ীর বিনতপুর যাচ্ছিল। 

তিনি আরো জানান, আহত হয়েছে বাসের সব যাত্রী। তবে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবু জাফর বলেন, “৯.

৫৬ মিনিটে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমার একটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। উল্টে যাওয়া এম এম পরিবহনের বাস থেকে হেলপারসহ সকল যাত্রীকে নিরাপদে বের করে আনি। গুরুতর আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, গাড়িটির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। 

ঢাকা/তামিম/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।

রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।

বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।

বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।

এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।

অবরোধকারীদের দাবি

অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ
  • হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
  • ৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
  • জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ