সন্ধ্যাটা অনেকগুলো মোচড়ানো সন্ধ্যা নিয়ে ম্যাসনের বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। কোথাও একটুখানি মিষ্টি বাতাস নেই। ধুলোজর্জর বাতাসে ম্যাসনের শ্বাস নিতে খারাপ লাগলে তার মনে হলো কৈশোরের নির্দোষ বেদনার মতো কিছু নিয়ে ভেঙে পড়ার জন্য সে মারা যাচ্ছে। কষ্টগুলো এখন এত দোষযুক্ত যে কৈশোরের সময়টাকে সন্ধ্যার ভেতরে ঘুরতে দেখে তার আবার ওই বয়সে ফিরে যেতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু সে টের পাচ্ছে যে উল্টো ঘটনাই ঘটছে। ক্রমেই বুড়ো হচ্ছে সে। এক দিনে বয়স বেড়ে যাচ্ছে যেন এক বছর। ক্রমেই স্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনা ফুরিয়ে আসছে, যেন বেঁচে আছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর দেখা পাবে বলে।
অথচ এভাবে সে বাঁচতে চায়নি, এভাবে কে বাঁচতে চায়? এই যুদ্ধে মশগুল শহরে আজকাল কেউ বেঁচে থাকতে চায় না। প্রত্যেকেই মৃত্যুর জন্য যেমন প্রার্থনা করে, আবার প্রার্থনা করে সময়কে পিছে ফেলে বেঁচে থাকার জন্য।
যুদ্ধটা কবে শুরু হলো, কেন হলো—এই আলাপ আজ অর্থহীন। ম্যাসনের কাছে জানতে চাইলে সে বলতেও পারবে না। ওরা যে মফস্সল শহরে থাকে, সেখানে যুদ্ধ হবে, এমনটা ম্যাসন কখনো ভাবেনি। রাজধানীর বন্ধুদের যুদ্ধে যেতে হচ্ছে, তারও যে যাওয়ার সময় এগিয়ে আসবে, তা দূরবর্তী কল্পনায়ও মনে করেনি। ঠিক এমন সময় ওদের ঘরে ছোট্ট একটা বাচ্চা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।
সন্ধ্যাটা রাতের ভেতর ডুবে যেতে থাকলে চারপাশের অন্ধকার ম্যাসনের চোখকে গিলে ফেলল, অন্ধকার দেখতে শুরু করল সে–ও। যদি যুদ্ধে যেতে হয়, ফিওনা আর রিওনাকে রেখে কেমন করে যাবে?
স্মৃতির ভেতর থেকে সম্পর্কটা একলাফে ফিরে যায় কৈশোরে। চিঠিযুগে। ওরা পরস্পরকে চিঠি লিখত। কাঁচা হাতে বলত ভালোবাসার কথা। ভালোবাসার কথাগুলো কেমন ছিল, আজ তা ম্যাসনের কাছে জানতে চাইলে সেটা সে মনে করতে পারবে না। সমরেশ স্যারের বাসার টিউশনঘরটা চোখের সামনে আকার পেল। ওই যে ছোট ছোট বেঞ্চ, ওরা বসে আছে। ফিওনা বসেছে ম্যাসনের বাঁ দিকের বেঞ্চে। মাঝখানে হাঁটাচলার জন্য সরু জায়গা। চিঠি পাচার করতে তাই কোনো অসুবিধা হয় না। কত দিন আর স্যারের চোখ এড়ানো যায়? পড়ল ধরা। একেবারে মোক্ষম সময়ে যখন তাদের হাত পরস্পরের একদম কাছে, তখন স্যার জোরে চিৎকার দিয়ে বললেন, ‘এই এখানে কী হচ্ছে?’
আমতা আমতা করে ম্যাসন জবাব দিল, ‘কিছু না।’ পেছন থেকে হতচ্ছাড়া এক বন্ধু বলে বসল, ‘স্যার, এখানে চিঠি-চালাচালি হয়।’ তারপর যা হওয়ার তা–ই হলো। ব্যাচ থেকে ওদের আলাদা করে দিলেন স্যার।
তাই বলে কি আর কৈশোরের প্রেম থেমে থাকে? নিজের ক্লাস বাদ দিয়ে বিদ্যাময়ী স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকত ম্যাসন। সাইকেল নিয়ে চলত পিছু পিছু, ফিওনার বাড়ি পর্যন্ত। সেই সুখও কপালে সইল না বেশি দিন। ফিওনার মা টের পেয়ে গেলেন। তারপরও তাদের দেখা হতো। নদীর ধারে, কখনো খুব ভোরে। টিউশনির কথা বলে বের হতো দুজন। চুমুও খেল প্রথম ওই বয়সেই। টেস্ট পরীক্ষার আগের দিন। আবারও কারা যেন দেখে ফেলল। বন্ধ হয়ে গেল দেখাসাক্ষাৎ। এরপর এই চড়াই, ওই উতরাই পার হয়ে ম্যাসন আর ফিওনার বিয়ে হলো, এক হলো ওরা। এ যুগের যারা শুনবে, তারা হয়তো বিশ্বাস করতে চাইবে না। তাদের চোখ কপালে উঠে যাবে। এক দিনের প্রেম আবার টেকে নাকি?
টেকে এবং খুব ভালোভাবে টেকে। ম্যাসনের কাছে জানতে চাইলে তা-ই বলবে। কিন্তু যুদ্ধের শহরে এই সন্ধ্যার শেষবেলায় ম্যাসন নিজের গভীরে তাকিয়ে কেন যেন কৈশোরের উচ্ছ্বাসের সন্ধানটা আর পায় না। তার কেবলই মনে হতে থাকে কৈশোরের নির্দোষ বেদনার মতো নির্দোষ প্রেমটাও তার দরকার।
যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাস আগের ঘটনা। ফিওনা বলল, ‘আমাদের কত টাকা জমেছে, বলো তো?’ অফিসের একটা কাজ করছিল ম্যাসন। ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে বলল, ‘টাকা? কিসের জন্য?’
‘দুটো কাজ করতে চাই। প্রথমে ঘুরে আসতে চাই কাশ্মীর। শ্রীনগর, পেহেলগাম, গুলমার্গ, সোনমার্গ হয়ে একেবারে লাদাখ পর্যন্ত। দুই লাখে দুজনের হয়ে যাবে না?’
ম্যাসন ইতস্তত করে বলল, ‘তা হবে বৈকি। কবে যেতে চাও?’
লাফ দিয়ে উঠে ফিওনা বলল, ‘এই শীতে গেলে কেমন হয়?’
‘এই শীতে? শীতে তো লাদাখ বন্ধ থাকে।’
‘ওহ! তাই-তো!’ ফিওনার মুখের আলোটা মোমবাতি নিভে যাওয়ার মতো করে নিভে গেল এক ফুঁতেই।
‘আর দ্বিতীয় কাজটা?’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফিওনা বলল, ‘আমরা একটা বাচ্চা দত্তক নিলে কেমন হয়?’
ওই মুহূর্তে ম্যাসন কিছু বলতে পারেনি। তবে এমন কথা সে–ও ভাবছিল কয়েক দিন ধরেই। তবে আর বেশি দিন ভাবল না। দ্রুত দত্তক নেওয়ার সব কাজ সম্পন্ন করল তারা। দুই মাসের দেবশিশুটির নাম রাখল রিওনা। রিওনা ঘরে আসার চার দিন পর শুরু হলো যুদ্ধ, প্রথমে রাজধানীতে। তারও চার মাস পর ম্যাসনের ডাক পড়ল যুদ্ধক্ষেত্রে। যেতে হবে প্রান্তিক অঞ্চলে। বিদায়ের দিন ফিওনা তাকে জড়িয়ে ধরল। ম্যাসন বলল, ‘ফিরে আসব।’ বুক থেকে মুখ সরিয়ে ফিওনা বিষণ্ন স্বরে বলল, ‘তুমি কি সত্যি ফিরে আসতে চাও?’
২.
কতকাল ধরে ম্যাসন যুদ্ধ করে যাচ্ছে জানে না সে। হয়তো এক বছর, হয়তো এক যুগ, হয়তো এক শ বছর। এত দিন ধরে যুদ্ধ করে যাচ্ছে, যে সে রিওনার চেহারাটাও ভুলতে বসেছে। ফিওনাকে ইচ্ছে করেই ভুলে থাকছে।
‘ম্যাসন, কী ভাবছ?’
তাকিয়ে দেখে সামিরা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
‘কত দিন ধরে যুদ্ধ হচ্ছে সামিরা?’
‘আমরা কেউ তা জানি না।’
‘আমরা কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি?’
‘আমরা কেউ তা জানি না।’
চারপাশে গোলাগুলির শব্দ কিছুক্ষণের জন্য থেমেছে। বাংকারে কাদা মাখামাখি। ম্যাসন আর সামিরা পরস্পরের মুখোমুখি শুয়ে আছে। কারও শরীরে কোনো শক্তি নেই।
‘আমরা কি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছি সামিরা?’
‘মনে হয়, আমরা হেরে যাচ্ছি। শব্দ থেমেছে, সম্ভবত আমাদের লাস্ট লাইন অব ডিফেন্স কুপোকাত।’
‘আমরা কি বাড়ি ফিরতে পারব?’
‘তুমি চাও বাড়ি ফিরতে ফিওনার কাছে?’ সামিরা পাল্টা জানতে চায়।
ম্যাসন চুপ করে রইল।
সামিরা প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলল, ‘ওরা আমাদের গুলি করেই মারবে তো? নাকি ধরে নিয়ে যাবে?’
‘জানি না, সামিরা।’
এতক্ষণ এত শব্দ হচ্ছিল যে এই নীরবতা দুজনের খুব অসহ্য লাগছিল। যুদ্ধের সময়টা বাদ দিলে ম্যাসন টুকটাক লেখালেখি করে আর সামিরা গান গায়। তবে সে একজন চিকিৎসক। ম্যাসনকে এখানে পাঠানোর পর পরিচয় হয়েছিল সামিরার সঙ্গে। প্রথম দিন ব্যাটল ফিল্ডে আহত হয়ে তার কাছেই যেতে হয়েছিল। যুদ্ধাহত সৈনিকদের চিকিৎসার ভার ছিল সামিরার ওপরে। সামিরা ওদের সুন্দর সুন্দর স্বপ্নের কথা বলে আশা দেখাত। ম্যাসনের মনে কৈশোর ফিরে এল, যে কৈশোরের সন্ধান সে করছিল। নিজেকেই এভাবে বোঝাল, এই কৈশোরটা তার বেঁচে থাকার জন্য দরকার। এই যুদ্ধের ময়দানে না হলে সে বড় অসহায়। সামিরা আর ম্যাসন পরস্পরের হয়ে উঠল অন্য যোদ্ধাদের চোখ এড়িয়ে। দুজনের আলাদা জীবনের কথা ওরা ভুলে থাকল। ম্যাসন তো জানতেও চায়নি সামিরার যুদ্ধ–পূর্ববর্তী জীবন সম্পর্কে। ওরা প্রায়ই আলাপ করত, যুদ্ধ শেষ হলে কোথায় যাবে, কোথায় থাকবে, কী করবে ওরা!
ওরা মিলিত হয়েছে অনেকবার। দারুণ আনন্দ পেত। ‘এই আনন্দ আগে কখনো পেতাম না আমি, ম্যাসন প্রায়ই কথাটা বলত সামিরাকে। সামিরার বাঁ স্তনের ওপরে একটা তিল আছে। ম্যাসন বলত, তিলটা কপালের টিপের মতো। সেই ওরা মৃত্যুর কাছে দাঁড়িয়ে আছে।
সামিরা বলল, ‘ওরা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের খুঁজে বের করে মেরে ফেলবে কিংবা ধরে নিয়ে যাবে।’
ম্যাসন বলল, ‘একসঙ্গে মরে যাচ্ছি, ব্যাপারটাও মন্দ নয়।’
সামিরা একমত হলো না, ‘আমরা তো বাঁচতে চেয়েছিলাম।’
তখন ম্যাসন গভীর মনোযোগে তাকাল সামিরার দিকে। আচমকাই তার মনে হলো, ‘রিওনা বড় হলে কি দেখতে সামিরার মতো হবে?’ বেশি দূর ভাবতে পারল না। কেননা তখনই মাথার কাছে এসে থামল ভারী বুটের শব্দ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র র জন য প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে
সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।
এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।
এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’
আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।