রাজধানীর মিরপুরে মাদকের টাকা ভাগভাগি নিয়ে মধ্যরাতে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুইজন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের ই-ব্লকের ১ নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন—মো. জসিম উদ্দিন (৪৪) ও তার বোন শাহিনুর বেগম (৩২)। তাদের একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

গুলিবিদ্ধদের অভিযোগ, স্থানীয় এক ছিনতাইকারীকে আটকে পুলিশে দেওয়ার কারণে তাদের সঙ্গে শত্রুতাবশত এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে গোলাগুলিতে তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

মাসুদ আলম জানান, আজ শনিবার সকালে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আসেন। তাদের মধ্যে শহিদুলের দুই পায়ে হাঁটুর নিচে ও শাহিনুর বেগমের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি লেগেছে। আহত জসিম উদ্দিনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে এবং শাহিনুরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গুলিতে আহত জসিম উদ্দিন জানান, তিনি পরিবার নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় থাকেন। সেখানে তার ফার্নিচারের ব্যবসা আছে। মিরপুরে তার বোন শাহিনুর থাকেন। এক সপ্তাহ আগে তিনি গাজীপুর থেকে বোনের বাসায় আসেন।

তিনি আরও জানান, পাঁচ দিন আগে এলাকায় সোহাগ নামে এক ছিনতাইকারীকে পুলিশে ধরিয়ে দেই। তখন তার সহযোগীরা আমাকে হুমকি দিতে থাকেন। গত রাতে শবে বরাতের নামাজ পড়ে বাসার সামনে আসলে সোহাগের বিষয় নিয়ে এলাকার শরিফ, তুহিন, শহিদুল, সুজন, রিয়াজ সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে শহিদুল আমাকে গুলি করে।

জসিম উদ্দিন আরও জানান, খবর পেয়ে আমার বোন শাহিনুর বাসা থেকে বের হয়ে ওদের ধরতে গেলে তাকেও গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। পরে আমাদেরকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মাদক ব্যবসার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এই গুলির ঘটনা ঘটেছে। মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন এলাকার শহীদুল, তুহিনের গ্রুপের সঙ্গে জসিম ও তার বোন শাহিনুর মাদক ব্যবসা করেন। পরে তাদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে তাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এতে জসিম ও তার বোন শাহীনুর বেগম গুলিবিদ্ধ হন। 

ওসি আরও বলেন, ঘটনার বিস্তারিত আরও পরে জানা যাবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ