বদলে গেল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম
Published: 15th, February 2025 GMT
পল্টন ঘেঁষে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন হচ্ছে। ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। নতুন নামকরণ অনুযায়ী, এখন থেকে এটি পরিচিত হবে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’ নামে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, এনডিসি স্বাক্ষরিত চিঠিতে ভেন্যুটির নতুন নামকরণ হয়েছে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’।
পল্টনে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামের ইতিহাস দীর্ঘ দিনের। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়ামে স্বাধীনতার আগে থেকেই বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। পাকিস্তান আমলে এটি ঢাকা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। পাকিস্তান ঘরের মাঠে প্রথম টেস্ট ‘ঢাকা স্টেডিয়ামেই’ খেলেছিল।
আরো পড়ুন:
পুচকে ব্রাইটনের বিপক্ষে উড়ে গেল বিলিয়ন ডলারের চেলসি
চ্যাম্পিয়ন হতে অপেক্ষা বাড়ল ব্রাজিলের, আর্জেন্টিনারও
স্বাধীনতার পর, এই স্টেডিয়ামই হয়ে ওঠে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের কেন্দ্রবিন্দু। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৯৯৮ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম টেস্ট ম্যাচটা এই ভেন্যুতেই খেলে।
দেশের বিভিন্ন স্থাপনার মতো ক্রীড়াঙ্গনেও অনেক স্থাপনার নাম ছিল বিগত সরকার প্রধানের পরিবারের নামে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই সকল স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া স্থাপনার নাম পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ১৫০টি উপজেলা স্টেডিয়ামের নামও পরিবর্তন করা হয়। স্ব স্ব উপজেলার নামে এগুলোর নতুন নামকরণ হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন হলো জাতীয় পর্যায়ের এই স্টেডিয়ামের নাম। এই পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিকেও আনুষ্ঠানিক চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
এই স্টেডিয়ামে আশির দশক ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ফুটবল ও ক্রিকেট উভয়ই অনুষ্ঠিত হতো। তবে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম চালু হওয়ার পর, ধীরে ধীরে পল্টনে ফুটবল এবং মিরপুরে ক্রিকেট স্থানান্তরিত হয়। ২০০৫ সাল থেকে মিরপুরই হয়ে ওঠে দেশের ক্রিকেটের একমাত্র আন্তর্জাতিক ভেন্যু, আর পল্টনে ফুটবল ও অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে থাকে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল এই স ট ড য় ম ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি জমিতে সস্তায় সচিবদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত
সরকারি জমিতে সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হককে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব।
তদন্ত কমিটি গঠনসংক্রান্ত আদেশ আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ জুন প্রথম আলোয় ‘সরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নেন সচিবেরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উল্লিখিত ফ্ল্যাট প্রকল্পের নির্মাণ এবং হস্তান্তর কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সেতু বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের জানিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। এ ছাড়া সচিবসহ কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে সেতু বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, সেতু বিভাগের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশে কমিটির কার্যপরিধি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কী পদ্ধতিতে, কিসের ভিত্তিতে এবং কাদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হয়েছে, তা তদন্ত কমিটি নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে। এ ছাড়া যাঁদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কিংবা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো জমি বা ফ্ল্যাট পেয়েছেন কি না, তা–ও যাচাই করবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করবে।
সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য আবাসন নির্মাণের জন্য কেনা ৪০ একর জমি থেকে ১ দশমিক ১৫ একর জমি নিয়ে ৪টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে আমলা ও কর্মচারীদের জন্য। এর মধ্যে তিনটি ভবন সচিব ও বড় আমলাদের জন্য। তাতে ১৬৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪০টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়ে গেছে। বাকিগুলো ভবিষ্যতে সচিব ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বরাদ্দের চিন্তা রয়েছে বলে সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। চারটির মধ্যে একটি ভবন রাখা হয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য, যেখানে ফ্ল্যাট রয়েছে ১১২টি।
ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে উত্তরা মডেল টাউনে (তৃতীয় ধাপ), যা দিয়াবাড়ি এলাকা নামে পরিচিত। সেখানে বিভিন্ন সময় সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদে থাকা সচিবেরা ফ্ল্যাট নিয়েছেন। ফ্ল্যাট পেয়েছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের প্রভাবশালী আমলারা। ফ্ল্যাট পাওয়া সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার সংখ্যা ৩২। তাঁদের মধ্যে চারজন চাকরিতে রয়েছেন, দুজন অবসরের পর বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি) সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন, বাকিরা অবসরে গেছেন। সচিবদের বাইরে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিবসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তারা পেয়েছেন ফ্ল্যাট।
সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ ঘনিষ্ঠরাও পেয়েছেন পানির দামের ফ্ল্যাট। যেসব কর্মকর্তা সচিব পদে থেকে এসব ফ্ল্যাট নিয়েছেন, তাঁদের অনেকের আবার রাজউকের প্লট রয়েছে। সরকারি পদে থেকে তাঁরা ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট—দুটোই নিয়েছেন।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এর আওতায় বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি।
আরও পড়ুনসরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন সচিবেরা, তালিকায় কারা রয়েছেন১৪ জুন ২০২৫