রাষ্ট্র পুনর্গঠনে সংসদ নির্বাচন আয়োজনই এখন বড় অগ্রাধিকার: জোনায়েদ সাকি
Published: 15th, February 2025 GMT
সব রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যের জায়গায় আনতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, এ সময়ে জাতীয় কর্তব্য হচ্ছে, সংস্কার এগিয়ে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করা। সেদিক থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বেরিয়ে জোনায়েদ সাকি সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন। রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াতসহ দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে উপদেষ্টামণ্ডলী, কমিশনগুলোর প্রধানদেরসহ রাজনৈতিক দলগুলো এবং শিক্ষার্থীদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকেছেন। প্রশ্ন এসেছে, কীভাবে এ সংস্কারপ্রক্রিয়া, নির্বাচনপ্রক্রিয়া এগোবে। আমাদের দিক থেকে তিনটি প্রশ্নকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছি। প্রথমত, ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য তৈরি। যেসব বিষয়ে সবাই একমত, তা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা দরকার এবং সেটাই জাতীয় সনদ আকারে আমাদের সামনে আসতে হবে।
‘দ্বিতীয় হচ্ছে, কী পদ্ধতিতে এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা বলেছি, সংবিধান সংস্কার করতে হবে। আর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা টেকসই ব্যবস্থা হিসেবে যাতে এ সংস্কার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সরকার ও সব পক্ষ যাতে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়।
‘এ ছাড়া নির্বাচনকে এই সংস্কারপ্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা। সংস্কার যেমন নির্বাচনের জন্য দরকার, তেমনি সংস্কার সম্পন্ন করতেও নির্বাচন লাগবে। কাজেই এটাকে বিরোধ হিসেবে না দেখে আগামী নির্বাচনকে সংস্কার সম্পন্ন করার একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা। পরবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সংস্কার সভা বা সংসদ গঠিত হবে, সেখানে সংস্কারগুলো বিশেষভাবে সংবিধান সংস্কার যাতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়, তার একটা বাধ্যবাধকতা তৈরি করা এবং সে বিষয়ে অঙ্গীকার ও আইনে বাধ্যবাধকতা তৈরি করা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।