নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। দুটিই পাশাপাশি চলছে। গণতন্ত্র টেকসই হবে, এ ধরনের প্রস্তাব নিয়েই আগামী নির্বাচনের দিকে এগোবে দলটি।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মাহমুদুর রহমান বলেন, বৈঠকে প্রশ্ন আসছে, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হচ্ছে কি না? নতুন ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি জোর ও কায়দা করে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নতুন প্রজন্মের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেই দায় জ্যেষ্ঠদের বহন করতে হবে। কারণ, নতুন প্রজন্ম মনে করে, এই আওয়ামী লীগ এখন অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়।

মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংস্কারের প্রস্তাবগুলো সবাইকে দেওয়া হবে। সবাই সেগুলো পড়ে সেসব বিষয়ে মতামত দেবেন। সবার মতামত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর জনগণই বিচার করবে, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। এমন পরিস্থিতি যদি আসে, কোনো একটা মত সঠিক মনে হচ্ছে না, সেটাও যুক্তিযুক্তভাবে বদলানো হবে। এভাবেই তৈরি হবে জাতীয় ঐকমত্য।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘বৈঠকে কেউ কেউ মতামত দিয়েছেন ইসলামে যে বিধান আছে, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, রাষ্ট্রধর্মের কথা—এসব থাকতে হবে। যতগুলো ইসলামিক বিধান সংবিধানের মধ্যে আছে, কোনো কিছু পরিবর্তন করা যাবে না। কিছু কিছু পরিবর্তনে তারা অসন্তোষও প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রে বহু মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে।’

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই এগুলো করা সম্ভব। তাদের কার্যক্রমেও এ বিষয়টি আছে, যে সবকিছু দ্রুত সময়ের মধ্যে করার। পুরো জাতির মতামত নিয়ে তা একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার উদ্যোগও ভালো।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মত মত

এছাড়াও পড়ুন:

‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। তিনি বলেছেন, মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি শুধু মানবিক বিষয় নয়, এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। তাই বিস্তর বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।

আজ মঙ্গলবার দলের কুমিল্লা মহানগর শাখার শুরা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এ কথাগুলো বলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ তথ্য জানিয়েছে।

রেজাউল করীম বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য নিয়ে আমাদের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করে আসছে। বর্তমানেও বাংলাদেশে ১৪ থেকে ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট মানবিক পরিস্থিতির প্রতি আমরা সংবেদনশীল। বিপর্যস্ত মানুষের জন্য মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, এ ধরনের করিডর কেবল “মানবিক” রাখা যায় না। এর সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ফলে (করিডরের জন্য) মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে বা অন্য বিকল্পগুলোকেই বিবেচনা করা উচিত। কারণ, এ ধরনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার বা আরাকান আর্মি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কোনো অংশীদার নয়। তাই এ বিষয়ে তাড়াহুড়া না করে বুঝেশুনে সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, একটি রক্তক্ষয়ী গণ–অভ্যুত্থান হয়ে গেল, কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও চরিত্রে সেই অর্থে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ক্ষমতার জন্য উদগ্র ব্যাকুলতা, প্রতিহিংসা, হানাহানি ও কূটকৌশল এখনো চলমান। এই পরিস্থিতে নির্বাচনের চেয়ে ব্যক্তি, দল ও রাষ্ট্রের সংস্কারই প্রধান মুখ্য হওয়া উচিত।

ক্ষোভ প্রকাশ করে চরমোনাই পীর বলেন, স্বৈরতন্ত্র পতনে যে ব্যক্তি জীবন দিয়েছেন, তাঁর কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হলো। সেই মেয়ে পরে আত্মহত্যাও করল। এর চেয়ে কষ্টদায়ক ঘটনা আর কী হতে পারে? নিপীড়িত মেয়েটাকে কেন রাষ্ট্র রক্ষা করতে পারল না, সেই জবাব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই পতিত স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক এম এম বিলাল হুসাইনের সভাপতিত্বে শুরা অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জয়নাল আবেদীন, ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই: বিএনপি
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই: সিপিবি
  • সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ 
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
  • জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু