রাজনীতি করবে রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। আমরা জুলাইয়েও বলেছি– হয় আমরা থাকব, নয় আওয়ামী লীগ থাকবে। এর মাঝামাঝি কোনো অবস্থান নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। 

রোববার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে আয়োজিত নারী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) নারীবিষয়ক বিশেষ সেল।  

জানাকের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তা, জুলাই-আগস্টে শহীদদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং ভবিষ্যতে হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট যেন জন্ম নিতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্টে হত্যাযজ্ঞ চালানোর ঘটনা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বিস্তারিত উঠে এসেছে। এই মানবতাবিরোধীদের সঠিক বিচারের আওতায় নিয়ে না এলে বাংলাদেশে নারী-পুরুষ কারোই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। 

আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, সামনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসছে, সেখানে নারী প্রতিনিধিদের বেশি সংযুক্ত করতে হবে। তারা স্থানীয় সরকারে মানুষের কথা শুনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে। নতুন সংবিধানে নারীদের হিস্যা বুঝে নিতে হবে এবং গণপরিষদে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। 

যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আমরা জুলাইয়েও বলেছি, হয় আমরা থাকব, নয় আওয়ামী লীগ থাকবে। এর মাঝামাঝি কোনো অবস্থান নেই। সোহেল তাজ বলুন, আর অমুক তাজ বলুন, কোনো তাজেই আর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। 

কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.

মাহমুদা মিতু বলেন, অভ্যুত্থানের বড় শক্তি ছিল নারীরা। হাসিনার রাজাকার সম্বোধনের পর হল থেকে সর্বপ্রথম নারীরা বের হওয়ার পরই হাসিনার পতন ঘনিয়ে এসেছিল। অভ্যুত্থানেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারীরা। ৯ জন নারী মারা গেছে। এ ছাড়া দুই হাজার শহীদের মা, স্ত্রী জীবন্ত শহীদে পরিণত হয়েছেন।

নারী সেলের সদস্য তাসনুভা জাবীন বলেন, রাজনীতি করবে রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য থাকবে। তবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সেলের সম্পাদক সাদিয়া ফারজানা দিনার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরেখা খাতুন প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফোনে খালেদা জিয়া বললেন, ‘ভাই, জিয়াকে ড্রয়িংরুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’

৭৫-এর উত্তপ্ত নভেম্বর

শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ছিল দ্বিধাগ্রস্ত এবং দেশ প্রতিদিন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা সর্বজনাব নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও আবদুস সামাদ আজাদকে আটক করেন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখেন। বাতাসে প্রতিনিয়ত নানা গুজব উড়ছিল ও সাধারণ নাগরিকগণ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেনানিবাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে, নিজেদের মধ্যে যে-কোনো সময়ে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আর্মিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি ছিল।

পদাতিক বাহিনীর মধ্যে, বিশেষ করে ঢাকা ব্রিগেডের ১ম, ২য় ও ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারগণ মেজর ফারুক, রশিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল এবং আর্মির চেইন অফ কমান্ড পুনঃস্থাপনের জন্য তৎকালীন ব্রিগেড অধিনায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিলও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাঁর অধীনস্থ অফিসার ও সৈন্যগণই তাঁর সার্বিক কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে শেখ মুজিব হত্যায় জড়িত ছিল। এ পরিস্থিতিতে সেনাসদরে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফও সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের অনিয়ম ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।

মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম

সম্পর্কিত নিবন্ধ