সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদেরকে ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতরা ‘জুলাইযোদ্ধা’ নামে অভিহিত করা হবে। একইসঙ্গে এই খেতাবের পরিপ্রেক্ষিতে সনদ ও পরিচয়পত্রের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও দেবে সরকার।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তারা ‘জুলাই শহীদ’ নামে খ্যাত হবেন। এই নিরিখে সনদ পাবেন, পরিচয়পত্র পাবেন তাদের পরিবারগুলো। জুলাই অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তারা ‘জুলাইযোদ্ধা’ নামে খ্যাত হবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা পরিচয়পত্র পাবেন। অন্যান্য সরকারি সুবিধাও পাবেন সবাই।

এজন্য চলতি সপ্তাহেই জুলাই অধিদপ্তর গঠন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এ সপ্তাহেই আত্মপ্রকাশ করবে জুলাই অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে অধিদপ্তর করার নিরিখে একটি নীতিমালাও হয়েছে।

ফারুক-ই-আজম বলেন, যারা শহীদ হয়েছেন তারা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা পাবেন। চলতি অর্থবছরে তাদের ১০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে তারা ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবেন।’

আহতরা তিনটি ক্যাটাগরিতে সহায়তা পাবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আহতরা আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন এবং তারা ভাতাও পাবেন। যারা গুরুতর আহত তারা এককালীন পাঁচ লাখ টাকা পাবেন এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। একটি অঙ্গহানি হয়েছে এমন আহত যারা আছেন তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন এবং তারা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। সামান্য আহত ছিলেন চিকিৎসা নিয়েছেন ভালো হয়ে গেছেন, তারা চাকরিসহ পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তারা কোনো ভাতা পাবেন না।

তিনি বলেন, আহতরা বিভিন্ন মাত্রায় প্রশিক্ষণ পাবেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও অন্যান্য চাকরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের কর্মসংস্থান করা হবে। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাবেন তারা।

রাজনৈতিক সরকার যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে জুলাই অধিদপ্তরের অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে। এমন আশঙ্কা করেন কি না প্রশ্নে ফারুক-ই-আজম বলেন, আমরা তো সরকারিভাবে এ জুলাই অধিদপ্তর করেছি। পরে রাজনৈতিক সরকার যারাই নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা তো জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়েই আসবেন। আমরা মনে করি, তারাও এটিকে রক্ষা করবেন।

এছাড়া, আহত-নিহতের তালিকা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে যে বিশৃঙ্খলা রয়েছে, সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ তাদের তালিকা আমরা পেয়েছি ১৬ জানুয়ারি রাত ৭টায়। আমরা রাত ৩টায় গেজেট প্রকাশ করে দিয়েছি। তালিকাটাও তৈরি হচ্ছে খুব দ্রুত। মেডিকেল সেল থেকেই এটা করা হচ্ছে। সেটা যখন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে আসবে, আমরা তাৎক্ষণিক তা গেজেটে প্রকাশ করে দেব। সুতরাং এখানে কারো ঢোকা কিংবা এটা থেকে কারো বের হওয়ার কোনো উপায় থাকবে না।

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে একটি পরিবার। এতে ছয়জন আহত হয়েছেন। এছাড়া তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ধানের পালায় অগ্নিসংযোগ এবং খেতের পেয়ারা বাগান কেটে দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের পানিপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (১১ জুন) প্রথমে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর দিন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত ছয়জন এখন গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

হাসপাতালে ভর্তিরা হলেন, চর আষাড়িয়াদহ পানিপার গ্রামের আল্লাম হোসেন, তার ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবু, মেয়ে ফাতেমা বেগম, নাতি জিহাদ (১৪), ইয়াকুব আলী এবং তাদের প্রতিবেশী বকুল ওরফে কান্দু। তাদের মধ্যে আল্লামের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। ফাতেমার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। এছাড়া তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়।

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ২ পুলিশ আহত

আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫

আহতরা জানান, দিয়াড় মহব্বতপুর গ্রামের জামিলুর রহমানের কাছ থেকে আল্লাম হোসেনের স্ত্রী ও ছেলে গোলাম মোস্তফা ২০১৬ সালের ১৮ মে  শন্য দশমিক ৪৯৫০ একর ও তার আরেক ছেলে মুরশালীন ইসলাম ২০১৮ সালের ৯ মে শূন্য দশমিক ১১০০ একর জমি কেনেন। এর দলিলও করা হয়। জামিলুর রহমান আরএস রেকর্ডমূলে জমি বিক্রি করেন। পরে বিডিএস রেকর্ডে দলিলের কথা গোপন করে এসব জমি আবার নিজেদের নামে রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তারা জমিগুলো আবার দখলের চেষ্টা করছিলেন।

তারা আরো জানান, জমি কেনার পর প্রায় পাঁচ বছর আগে সেখানে পেয়ারা বাগান করা হয়। গত ১১ জুন সকালে জামিলুর রহমান ও তার ভাই আদিল হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ছেলেরা গিয়ে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় আল্লাম হোসেন গ্রামের লোকজনের কাছে নালিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন জামিলুর রহমান, তার ভাই আদিল হোসেন এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বল্লম ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আল্লাম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। বাড়িটিতে ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানের পালায়। দুই দিনের হামলায় প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। 

আহত আল্লাম হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। ধানের পালার আগুন নেভাতে গেলে হামলাকারীরা তার নাতি জিহাদকে ধাক্কা দিয়ে আগুনের ভেতর ফেলে দেয়। এতে তার পা পুড়ে যায়। তার আরেক নাতি ইয়াকুবকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাদের বাঁচাতে গেলে মেয়ে ফাতেমার গলায় হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়। ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবুকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে প্রতিবেশী বকুলকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।

ভুক্তভোগী আল্লাম আরো জানান, হামলাকারীরা তাদের আহত অবস্থায় ফেলে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা এখনো তাদের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। জমির দাবি করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেয়া হলে এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জামিলুর রহমানকে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, ঘটনা তিনি শুনেছেন। আহতরা থানায় অভিযোগ করতে চেয়েছেন। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত
  • ১৭ দিন পর কাটলো অচলাবস্থা, চক্ষু হাসপাতালে সেবা চালু
  • ১৭ দিন পর কাটলো অচলাবস্থা, চক্ষু হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু