রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ফুলবাড়ীয়া গ্রামে রাস্তার জমির উপর বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর প্রবাসী আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম (৩২) নামের এক বিএনপি কর্মীকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ভাঙচুর হওয়া বাড়ির মালিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)। তিনি ফুলবাড়ী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই জুয়েল জানান, স্থানীয় বিএনপি নেতা সাগর হোসেনের নেতৃত্বে তার বাড়িতে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা বাড়ি ভেঙে সব আসবাবপত্র লুট করেছে। তারা বাড়ি থেকে তিন ভরি স্বর্ণের গয়না, নগদ তিন লাখ টাকাসহ দামি জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও তারা জাহাঙ্গীর আলমের শ্বশুর আব্দুল কাদেরের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তা মেরামত করার জন্য জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে ফেলা মাটি সরাতে যায় জুয়েল। এ সময় স্থানীয় বিএনপি কর্মী সাইফুল ইসলাম বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই জনের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এ সময় লোহার শাবল দিয়ে জুয়েল আঘাত করলে সাইফুলের মাথায় জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। 

পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ চলে গেলে বিএনপি কর্মী সাগরের নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে হামলা করে। 

এ বিষয়ে বিএনপি কর্মী সাগর হোসেন বলেন, রাস্তার জায়গা না রেখে তারা বাড়ি নির্মাণ করেছে। বাড়ি নির্মাণের সময় স্থানীয় জনসাধারণ বাধা দেন। রাস্তার জায়গা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করতে বলেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম কারো কথা শোনেননি। 

তিনি বলেন, ওই রাস্তার সংস্কার কাজ চলছে। কিছু মাটি তার বাড়ির সামনে রাখা হয়েছিল। জুয়েল গিয়ে সেই মাটি ফেলে দিতে থাকে। এ সময় সাইফুল ইসলাম নামের একজন বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে জখম করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে গ্রামবাসী তার বাড়িতে হামলা করে।

পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে দুই দফায় সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম ল ইসল ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মেসি–সুয়ারেজরা কি এমএলএসের বিপদ বাড়াচ্ছেন

লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) বেশি বয়সীদের মিলনমেলা বসিয়েছে ইন্টার মায়ামি। আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে দলটি নিয়ে এসেছে বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা ও সের্হিও বুসকেতসকে। এঁদের সবার বয়সই ৩৫ পেরিয়ে গেছে।

ইউরোপ মাতানোর পর যাঁরা অবসর–পরবর্তী সময় কাটানোর জন্যই যেন যুক্তরাষ্ট্রের লিগে খেলছেন। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা খেলোয়াড় নিয়ে দল সাজালে কেমন হয়, সেটিই দেখতে পাচ্ছেন এমএলএসের দর্শকেরা।

আজ বাংলাদেশ সময় সকালে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মেসির মায়ামি ৩-১ গোলে হেরেছে কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের কাছে। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে হেরে মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে মায়ামিকে। এমন বাজে অবস্থার জন্য মেসিদেরই দুষছেন কেউ কেউ।

‘মেসিদের যে মেয়াদ শেষ’—সেটা আকার-ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক ডিফেন্ডার ওয়ারেন বার্টন, ‘ভ্যাঙ্কুভার দেখিয়ে দিল মায়ামির দুর্বলতা কোথায়। তারা তো দৌড়াতেই পারে না, ঠিকমতো রক্ষণও সামলাতে পারে না।’

আগের মতো আর ফর্মও নেই মেসিদের। এ মৌসুমে মেজর সকার লিগে এই আর্জেন্টাইনের গোল মাত্র তিনটি। আর সুয়ারেজের একটি। ভ্যাঙ্কুভারের সঙ্গে তো দৌড়িয়ে পেরে উঠতে পারেননি মেসি–সুয়ারেজরা। দুই দলের মধ্যে বড় তফাতটা বয়সের। মায়ামির নিয়মিত একাদশে তরুণের চেয়ে বুড়োদের দাপটই বেশি। যেখানে ভ্যাঙ্কুভার তরুণের গুরুত্ব দিয়েই দল সাজায়। সর্বশেষ দুই দেখায় দুই দলের গতিতেও তাই বড় হেরফের দেখা যায়।

ভ্যাঙ্কুভারের কোচ জ্যাসপার সোরেনসেন ম্যাচের পর মায়ামিকে খোঁচা মেরেছেন এভাবে, ‘আমার মনে হয় এটা বলা ঠিক হবে যে আমাদের একটি তরুণ দল আছে এবং এমন একটি দল, যারা দৌড়াতে এবং দাপটের সঙ্গে খেলতেও পারে।’

সামনে মায়ামির জন্য আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। জুনে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে হবে মেসিদের। সেখানে মিসরের আল আহলি, পর্তুগালের পোর্তো, ব্রাজিলের পালমেইরাসের মতো ক্লাবের মুখোমুখি হতে হবে। যে মায়ামি ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৫ গোল হজম করে তারা ক্লাব বিশ্বকাপে কেমন করবে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

মেসিরা মায়ামিতে আসার পর থেকেই তাঁদের নিয়ে নানা আলোচনা। এমএলএসকে অনেকেই বুড়ো খেলোয়াড়দের সময় কাটানোর লিগ হিসেবে গণ্য করেন। সর্বশেষ ক্লাবটির কোচের দায়িত্ব নেন মেসির সাবেক সতীর্থ হাভিয়ের মাচেরানো। তাঁকে নিয়েও অনেক কথা হয়। কেউ এমএলএসকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ফুটবলারদের লিগ বলেও রসিকতা করেন। এখন মেসি–সুয়ারেজদের কারণে লিগের জৌলুস বাড়লেও তাঁদের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার ব্যর্থতায় ‘বয়স্ক–পুনর্বাসন কেন্দ্র’ কথাটা এমএলএসের পাশে আরও জেঁকে বসতে পারে। যা লিগের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ক্ষতিকর দিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ