মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সরকারবাজারের কাছে বরাক নদীর ওপর একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ হয়েছে ৯ মাস আগে। এরপরেও ঠিকাদারের পক্ষ থেকে সেতুর কাজ শুরু করা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই এলাকায় নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।
বর্তমানে সরকারবাজারে বরাক নদীর ওপর যে সেতুটি রয়েছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেটি ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। বৃষ্টির মৌসুমে ওই সেতু পারাপারে ব্যাপক ঝুঁকি নিতে হয় এলাকাবাসীকে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সেতু এড়িয়ে চলতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভরা নদী পাড়ি দিতে হয় নৌকায় করে।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সরকারবাজারের কাছে বরাক নদীর ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর স্থলে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১১ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতুটি নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেতু নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স সাজিদা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই বছরের ২৮ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আজ পর্যন্ত সেতুটির কার্যক্রম শুরু করেনি ওই প্রতিষ্ঠানটি। এতে ভাঙা সেতু দিয়েই নদী পারাপার চলছে এখানকার অন্তত ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের।
স্থানীয় নাসিরপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ নূরুল ইসলাম জানান, শীতের দিনে ভাঙা এই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলে খুব একটা সমস্যা না হলেও যানবাহন চলাচলে সমস্যা হয়। বর্ষার সময় অনেকে পা পিছলে পড়ে আঘাত পেয়েছেন এখানে। সেতু ঠিক না হওয়ায় বর্ষার ভরা বরাকের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের যেতে হয়। নতুন সেতুর কাজ হওয়ার কথা শুনছেন অনেক দিন ধরেই। এখনও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই।
স্থানীয় খলিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরী জানান, খলিলপুর ও মনুমুখ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাজারে গরু বেচা-কেনার জন্য সরকারবাজার প্রসিদ্ধ। কয়েকটি গ্রামের মানুষ গরু-ছাগল নিয়ে এ সেতু ধরে বাজারে আসেন। যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে। স্থানীয়দের দুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত সেতুর কাজ শুরু করা দরকার। কর্তৃপক্ষ সেতু নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদারের খামখেয়ালিতে কাজ শুরু হচ্ছে না। বর্ষার আগে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা গেলে সবার জন্য ভালো হতো।
কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের একজন প্রকৌশলী অভিজিৎ দে মোবাইল ফোনে সমকালকে জানান, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য কাজ শুরু করতে প্রথম দিকে বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া এক প্যাকেজে বিভিন্ন এলাকায় ৬টি সেতু নির্মাণের কাজ পাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত এমন এলাকার কাজ শেষে বরাক নদীর ওপর নির্মিত সেতুর কাজ শুরু করা হবে। ১৫ দিন সময় পেলেই সেতুর নিচের কাজ শেষ করে ফেলা সম্ভব। তখন বৃষ্টি-বাদল হলেও কোনো সমস্যা হবে না।
সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি তিনি মৌলভীবাজারে যোগদান করেছেন। মোবাইল নম্বর না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।  সদর ইউএনও মো.

তাজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে, বাবা থানায় আটকা ২৬ ঘণ্টা 

ছেলে বিরুদ্ধে হুন্ডির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভ্যানচালক বাবাকে প্রায় ২৬ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যায় ভ্যানচালক ফজলু প্রামাণিককে আটক করে থানায় আনে পুলিশ। আজ সোমবার রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানার গারোদখানায় রয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার খোকসা থানায়। ফজলু উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের ধুসুন্ড গ্রামের বাসিন্দা। তাকে আটক করে থানায় আনেন এসআই তুষার। 

ভ্যানচালক ফজুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার কথা স্বীকার করেছেন এসআই তুষার। তিনি বলেন, ‘বৃদ্ধের বিরুদ্ধে গোপন অভিযোগ আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটকে রাখা হয়েছে।’ তবে কী অভিযোগে আছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আপনি ফাউ কথা না বলে, জায়গায় কথা বলতে বলেন।’ 

ভ্যানচালকের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুল গাফ্ফার টোকন নামে এক ব্যক্তি হুন্ডির ব্যবসা করেন। নূর এন্টার প্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি হুন্ডির ব্যবসা করেন। আমার ছেলে সজল ওই প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করত। সম্প্রতি গাফ্ফারের কাছে বকেয়া বেতন দাবি করায় ছেলের সর্বনাশ হয়েছে। প্রথমে সজলের বিরুদ্ধে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন গাফ্ফার। এ টাকা জন্য জমি লিখে দেওয়ার চাপ দেন তিনি। এক পর্যায়ে দুই মাস আগে তার ছেলের বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন গাফ্ফার। অভিযোগ মিটিয়ে ফেলার জন্য থানা-পুলিশ সজলের ওপর চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ছেলে আত্মগোপন করায় রোববার সন্ধ্যায় এসআই তুষার আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নেন। এর পর থেকে তিনি থানার গারদে রয়েছেন।’ 

খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সারাদিন জেলা সদরে ব্যস্ত ছিলাম। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরে জানাব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ