আইসিসি ও এসিসির শেষ কয়েকটি টুর্নামেন্টে দেখা গেছে বাংলাদেশ ও ভারত ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা দেখা গেছে। এশিয়া কাপের ফাইনাল, নিদাহাদ ট্রফির ফাইনালে ওই উত্তেজনা ছিল। ভারতের বাংলাদেশ সফর ঘিরে ছিল বাড়তি উন্মাদনা। ২০১৫’র ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৭’র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বেশ হাইপ পেয়েছিল। 

দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। নিরপেক্ষ ভেন্যু বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় হওয়া ম্যাচে ভারতের পাশাপাশি গ্যালারিতে বাংলাদেশের দর্শকও থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নতুন ‘উত্তেজনার’ জন্ম দিতে পারে। 

এসব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, ওই উত্তেজনা ক্রিকেটারদের খুব একটা স্পর্শ করে না, ‘অবশ্যই ভারত ও বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়ে আলাদা এক্সসাইটমেন্ট থাকে। তবে ক্রিকেটাররা এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে না। কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় ক্রিকেটারদের ফোকাস সেদিকে থাকে। মাঠে কতটা নির্ভার থাকা যায় এটা নিয়েই চিন্তা করে সবাই।’ 

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা থাকলেও আইসিসি কিংবা এসিসির আসরে ফলাফল হয়েছে একতরফা। শেষ হাসি হেঁসেছে ভারত। শান্তর মতে, ভারতকে হারাতে হলে পরিকল্পনা মাফিক ভালো করতে হবে তিন বিভাগে, ‘আমরা গত কয়েক বছর ধরে ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো দল। এখানকার কন্ডিশন অনেকটা চেনা। আমি মনে করি, ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে আমাদের ভালো করতে হবে। আগামীকাল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ভালো ম্যাচ হতে পারে।’ 

বাংলাদেশ দলটাকে ভারসাম্যপূর্ণই মনে করছেন নাজমুল শান্ত। তবে পেস বোলিং আক্রমণে যে প্রতিপক্ষের বাড়তি ফোকাস থাকবে সেটা অনেকটাই অনুমেয়। তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দুবাইয়ের উইকেটে মুস্তাফিজ কার্যকর হতে পারেন। প্রতিপক্ষকে ভড়কে দিতে পারে নাহিদ রানার ‘গতিতে ছোঁড়া গোলা’। 

ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিলেন দেশের গতিময় পেসার নাহিদ। তবে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ পেস বোলিং নির্ভর নয় বরং পেস-স্পিনে ভারসাম্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন শান্ত, ‘পূর্বে আমরা পেস আক্রমণ নিয়ে ভুগতাম। গত কয়েক বছর আমরা পেস বোলিংয়ে খুব ভালো করছি। নাহিদ রানার মতো পেসার পেয়েছি। গত কিছু ম্যাচে সে ভালো করেছে, জোরে বোলিং করেছে। এই মাঠে ওমন বোলিং করলে পুরো বোলিং ইউনিট সহায়তা পাবে। প্রতিপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। তাসকিন দারুণ বোলিং করছেন। ফ্লাডলাইটে বল কিছুটা সুইং করতে পারে। তারা ভালো জায়গায় বোলিং করলে দল উপকৃত হবে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ