বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ‘উত্তেজনা’ নিয়ে যা বললেন শান্ত
Published: 19th, February 2025 GMT
আইসিসি ও এসিসির শেষ কয়েকটি টুর্নামেন্টে দেখা গেছে বাংলাদেশ ও ভারত ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা দেখা গেছে। এশিয়া কাপের ফাইনাল, নিদাহাদ ট্রফির ফাইনালে ওই উত্তেজনা ছিল। ভারতের বাংলাদেশ সফর ঘিরে ছিল বাড়তি উন্মাদনা। ২০১৫’র ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৭’র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বেশ হাইপ পেয়েছিল।
দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। নিরপেক্ষ ভেন্যু বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় হওয়া ম্যাচে ভারতের পাশাপাশি গ্যালারিতে বাংলাদেশের দর্শকও থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নতুন ‘উত্তেজনার’ জন্ম দিতে পারে।
এসব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, ওই উত্তেজনা ক্রিকেটারদের খুব একটা স্পর্শ করে না, ‘অবশ্যই ভারত ও বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়ে আলাদা এক্সসাইটমেন্ট থাকে। তবে ক্রিকেটাররা এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে না। কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় ক্রিকেটারদের ফোকাস সেদিকে থাকে। মাঠে কতটা নির্ভার থাকা যায় এটা নিয়েই চিন্তা করে সবাই।’
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা থাকলেও আইসিসি কিংবা এসিসির আসরে ফলাফল হয়েছে একতরফা। শেষ হাসি হেঁসেছে ভারত। শান্তর মতে, ভারতকে হারাতে হলে পরিকল্পনা মাফিক ভালো করতে হবে তিন বিভাগে, ‘আমরা গত কয়েক বছর ধরে ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো দল। এখানকার কন্ডিশন অনেকটা চেনা। আমি মনে করি, ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে আমাদের ভালো করতে হবে। আগামীকাল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ভালো ম্যাচ হতে পারে।’
বাংলাদেশ দলটাকে ভারসাম্যপূর্ণই মনে করছেন নাজমুল শান্ত। তবে পেস বোলিং আক্রমণে যে প্রতিপক্ষের বাড়তি ফোকাস থাকবে সেটা অনেকটাই অনুমেয়। তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দুবাইয়ের উইকেটে মুস্তাফিজ কার্যকর হতে পারেন। প্রতিপক্ষকে ভড়কে দিতে পারে নাহিদ রানার ‘গতিতে ছোঁড়া গোলা’।
ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিলেন দেশের গতিময় পেসার নাহিদ। তবে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ পেস বোলিং নির্ভর নয় বরং পেস-স্পিনে ভারসাম্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন শান্ত, ‘পূর্বে আমরা পেস আক্রমণ নিয়ে ভুগতাম। গত কয়েক বছর আমরা পেস বোলিংয়ে খুব ভালো করছি। নাহিদ রানার মতো পেসার পেয়েছি। গত কিছু ম্যাচে সে ভালো করেছে, জোরে বোলিং করেছে। এই মাঠে ওমন বোলিং করলে পুরো বোলিং ইউনিট সহায়তা পাবে। প্রতিপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। তাসকিন দারুণ বোলিং করছেন। ফ্লাডলাইটে বল কিছুটা সুইং করতে পারে। তারা ভালো জায়গায় বোলিং করলে দল উপকৃত হবে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।