ভারতশাসিত কাশ্মীরে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তরুণের আত্মহত্যা
Published: 19th, February 2025 GMT
ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানের মাখান দীন নামে এক তরুণের আত্মহত্যা ও সেনাবাহিনীর গুলিতে একজন নিহত হওয়ার পর এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ভারত–নিয়ন্ত্রত কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলায় খালি একটি মসজিদের ভেতর মাথায় টুপি পরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে মাখান দীন। তাঁর গায়ে নীল–সাদা স্পোর্টস জ্যাকেট। সেখানে তিনি নিজের মুঠোফোনে জীবনের শেষ ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন। শ্মশ্রুমণ্ডিত ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ বলেন, এ অঞ্চলে আর কেউ যাতে তাঁর মতো পুলিশের নির্যাতনের শিকার না হন, সে জন্য তিনি নিজের জীবন ‘উৎসর্গ’ করছেন।
পুলিশের দাবি, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে।
৫ ফেব্রুয়ারি ভিডিওটি করা হয়। চার মিনিটের সেই ভিডিওতে তিনি বলেন, তিনি ‘কখনো’ কোনো বিদ্রোহীকে দেখেননি। এর আগের রাতে পুলিশের হেফাজতে যে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেই বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
মুঠোফোনের ক্যামেরা বন্ধ করার আগে মাখান বলেন, ‘আমার পর আর যাতে কাউকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে না হয়, সে জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করছি।’ এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন।
৭ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে পুলিশ দাবি করেছে, পাকিস্তান এবং আরও কয়েকটি দেশের সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে দীনের যোগাযোগ ছিল। এবং তাঁকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ সঠিক নয়। এমনকি তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও নেই বলে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, মাখানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি বাড়ি চলে যান এবং আত্মহত্যা করেন। জম্মু জেলা প্রশাসন দীনের আত্মহত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করছে।
এরই মধ্যে দীনের এই ভিডিও বার্তা কাশ্মীর ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে হাজারো মানুষের মুঠোফোনে ও টিভির পর্দায় ছড়িয়ে পড়েছে।
১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান, অন্যটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত।
দেশভাগ হলেও হিমালয়ের পাদদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা জম্মু-কাশ্মীরের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাশ্মীর তখন স্থানীয় এক রাজার শাসনাধীন। দেশভাগের পরপরই সেখানে সংঘাত শুরু হয়। ভারত ও পাকিস্তান সেনা পাঠায় সেখানে। পাকিস্তান কাশ্মীরের এক-তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়, আর ভারতের নিয়ন্ত্রণে যায় দুই-তৃতীয়াংশ। তবে উভয় দেশই কখনোই পুরো ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার আশা ছাড়েনি। পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ দুটি এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে তিনটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। সীমান্তরেখায় মোতায়েন করা হয় লাখ লাখ সেনা।
১৯৮৯ সাল থেকে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সশস্ত্র আন্দোলন চলে আসছে। একে কেন্দ্র করে হাজারো মানুষের প্রাণ গেছে।
২০১৯ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয়। একে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এই পদক্ষেপের ফলে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাতুলকে উৎসর্গ করে রকসল্টের প্রথম গান
তরুণ রক শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত প্রতিযোগিতা ‘দ্য কেইজ’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আলোচনায় আসে রকসল্ট। ব্যান্ডটি পথচলার প্রথম মাসেই ‘নিষ্পত্তি’ নামে নিজেদের প্রথম গান প্রকাশ করেছে। গানটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় ব্যান্ডটির ইউটিউব চ্যানেলে লিরিক্যাল ভিডিও আকারে এসেছে। অ্যাপল মিউজিক, অ্যামাজন মিউজিক ও স্পটিফাইয়েও গানটি শোনা যাচ্ছে। গানটি লিখেছেন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সাজ্জাদ আল নাহিয়ান।
আরও পড়ুনবর্ষায় বাড়ছে কনসার্ট১৯ জুলাই ২০২৫রকসল্ট গানটি উৎসর্গ করেছে সদ্য প্রয়াত রক ব্যান্ড ওন্ড-এর ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও শব্দ প্রকৌশলী এ কে রাতুলকে। ২৭ আগস্ট গানটি প্রকাশের কথা থাকলেও সেদিন রাতুলের মৃত্যুতে গানটির প্রকাশ স্থগিত করা হয়। ব্যান্ডটির বেজ গিটারিস্ট রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেইজ–এর পুরো জার্নিতে রাতুল আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন সাউন্ডের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের আড্ডা ও পরামর্শ হয়েছে। মৃত্যুর দুদিন আগে ২৫ জুলাই আমরা একসঙ্গে গানটি শুনেছি। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুর ট্রমা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারছি না। গানটি তাঁর স্মৃতিতে উৎসর্গ করছি। তিনি যেখানেই আছেন যেন ভালো থাকেন।’
রকসল্ট ব্যান্ডের সদস্যরা