তিন মাসের সুমাইয়ার পৃথিবীজুড়ে শূন্যতা, একরাশ হাহাকার! আপন বলে কেউ বেঁচে নেই তার। বাবা-মায়ের আদর, স্নেহ, বুঝে উঠার আগেই শিশুটিকে হাসপাতালের শয্যায় রেখেই পৃথিবী ছাড়লেন সুমন মিয়া ও শারমিন। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় গ্যাসের আগুন হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়ে সারা ঘরে। আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করে সুমনের পরিবার। তিন মাসের সুমাইয়া তখনও ঘুমে। সুমন তার দুই সন্তান নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। তারপরও সুমাইয়ার শরীরের ৭ শতাংশ ঝলসে যায়। রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন সুমাইয়া শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় আরও ১১ জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন জন মারা গেছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আটজন। তাদের মধ্যে তিনজনের আশঙ্কাজনক।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারমিন মারা যান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান। তিনি বলেন, ‘৪২ শতাংশ পোড়া নিয়ে শারমিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার অবস্থা আগে থেকেই জটিল হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। আজ সকালেও অস্ত্রোপচার করা হয়। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো গেলো না। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগে গত রোববার ভোর রাতে শিউলি আক্তার এবং রোববার দুপুরে সুমন মারা যান। শিউলি আক্তারের শরীরের ৯৫ শতাংশ এবং সুমনের শরীরের ৯৯ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

একই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে সুমাইয়ার। বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঁচতলার ৫২০ নম্বর শয্যায় ভর্তি রয়েছে। ক্ষুধা পেলেই কাঁদছে শিশুটি। নিরুপায় শিশুটির কান্না থামাতে সুমনের সহকর্মী রাশেদের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বুকের দুধ দিচ্ছেন। শুধু সুরাইয়াকে দুধ খাওয়ার জন্য তার পাশের শয্যায় ভর্তি তিনি।

শারমিন সুলতানা সমকালকে বলেন, ‘আমার নিজেও একটা আট মাসের সন্তান রয়েছে। সন্তানের মর্ম আমি বুঝি। বুকের দুধের অভাবে শিশুটি কষ্ট পাবে এটি মেনে নিতে পারছিলাম না। স্বামীর সহকর্মী দগ্ধ হওয়ার খবর শুনি নিজেই হাসপাতালে চলে এসেছি।’

বার্ন ইনস্টিটিউটে এখনও আটজনের চিকিৎসা চলছে। তারা হলেন- জহুরা বেগম (৭০), মো.

মনির হোসেন (৪৫), সূর্য বানু (৫০), সোহেল মিয়া (৩৮), শামিম (১৫), মাহাদী (৭), সোয়ায়েদ (৪) ও সুমাইয়া (৩)। দগ্ধদের সমন্বিত চিকিৎসায় গত রোববার ২২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আটজনের মধ্যে সোয়ায়েদের ২৭ শতাংশ, মনির হোসেনের ২০ শতাংশ, মাহাদীর ১০ শতাংশ, শামীমের ১৪ শতাংশ, সোহেলের ১০ শতাংশ, সুরাইয়ার ৯ শতাংশ, সূর্য বানুর ৭ শতাংশ ও জহুরা বেগমের শরীরের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর পাঁচজনকে ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা চলছে। তাদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন

নাটক, সিনেমা কিংবা ওয়েব—সব প্ল্যাটফর্মেই তিনি সরব। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, এই অভিনেতা চাকরির ফাঁকে শুটিং করেন। একসঙ্গে দুই জায়গায় মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে দু–তিন মাস পরপরই সিদ্ধান্ত নেন, চাকরি ছাড়বেন। তাঁর এই চাকরি ছাড়ার কথা শুনলেই এখন সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন। এই অভিনেতার নাম মোস্তফা মন্ওয়ার। আজ তাঁর জন্মদিন।

এই অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, চাকরি ছাড়ার কথা তিন-চার মাস পরপর বলবেন—এটা সহকর্মীরা ধরেই নিয়েছেন। কারণ, শুটিংয়ে সময় দিতে হয়। অফিসেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।

মোস্তফা মন্ওয়ার বলেন, ‘দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে আমি অভিনয় ও চাকরি একসঙ্গে করছি। অনেকবার চেয়েছি চাকরি ছেড়ে শুধু শুটিং শুরু করি। কিন্তু কোনোভাবেই এটা হচ্ছে না। অর্থনৈতিক কারণে অভিনয়কেই শুধু পেশা হিসেবে নিতে পারছি না। চাকরিও ছাড়তে পারছি না। এর আগে চার-পাঁচবার চাকরি ছেড়েছি। কিন্তু আবার চাকরিতেই ফিরতে হয়েছে। ছুটির দিনে পরিবারকে সময় দিতে পারি না। শুটিংয়ে যাই।’

মোস্তফা মন্ওয়ার। ছবি: ফেসবুক থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল’
  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন