অধৈর্য হওয়ার কারণ দেখি না: হাবিব
Published: 20th, February 2025 GMT
‘পাগল হাওয়া’ গানটি কবে আসবে? এ একটি প্রশ্ন বারবার শুনতে হচ্ছে হাবিব ওয়াহিদকে। নন্দিত এ শিল্পী ও সংগীতায়োজকের গান নতুন আয়োজন নিয়ে শ্রোতাদের কৌতূহল সবসময় চোখে পড়ার মতো। তবে এবার কৌতূহলটা একটু বেশি মনে হয়েছে। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, ঠিক বারো দিন আগে ‘পাগল হাওয়া’ গানের একটি টিজার প্রকাশ করা হয়েছিল।
ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়েছিল গানটি শিগগিরই আসছে। সে কারণে অনেকে ভেবেছিলেন ১৪ ফেব্রুয়ারি বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গানটি প্রকাশ করা হবে। কিন্তু ভক্তদের সবাই অবাক, ‘পাগল হাওয়া’র পরিবর্তে ‘তোমার মন জানে’ শিরোনামে নতুন একটি মেলো-রোমান্টিক গান প্রকাশ করায়। ‘তোমার মন জানে’ ভালো লাগলেও একটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে অনেকের মনে। ‘পাগল হাওয়া’ শিরোনাম বদলে দিয়েই কি ‘তোমার মন জানে’ গানের নামকরণ? এ প্রশ্নই ছিল অনুরাগীদের মনে। কিন্তু যখন তারা আবিষ্কার করলেন, ‘তোমার মন জানে’ আলাদা একটি গান, তখন থেকেই হাবিবকে প্রশ্ন করা শুরু করেছেন ‘পাগল হাওয়া’ কবে প্রকাশ পাবে।
এ গান নিয়ে বাড়তি কৌতূহলের আরেকটি কারণ এতে মডেল হিসেবে অংশ নিয়েছেন আফসানা চৌধুরী শিফা; বাস্তব জীবনে যিনি হাবিব ওয়াহিদের জীবন সঙ্গীনি। যদিও এ বিষয়ে হাবিবের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি, তারপরও খবর রটে গেছে চারদিকে; যা নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছেন এ শিল্পী।
হাবিব ওয়াহিদ বলেন, ‘আমি জানি না, টিজার দেখে সবাই কীভাবে বুঝে গেল ‘পাগল হাওয়া’ গানে শিফা মডেল হয়েছে। টিজারে তো কারও মুখ স্পষ্ট নয়; আমিও এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলিনি। তারপরও দেখছি, বিষয়টা অনেকের জানা। শুধু তাই নয়, বারবার এ প্রশ্নও শুনতে হচ্ছে, ভাবি (শিফা) আর আপনার নতুন গানটি কবে আসবে? সবার কথা থেকে যা বুঝেছি, তারা ধরেই নিয়েছিলেন গানটি ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ পাবে। কিন্তু দেখুন, আমি কোথাও এ গান প্রকাশের দিন-তারিখ উল্লেখ করিনি। শুধু জানিয়েছি, গানটি আসছে। এ নিয়ে এতটা অধৈর্য হওয়ারও কারণ দেখি না। আমার কথা হলো, যে সৃষ্টি আমি তুলে ধরছি, তা শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।’
হাবিব আরও বলেন, ‘শিফা সৌখিন মডেল। যে কারও গানে মডেল হিসেবে অংশ নিতেই পারে। তাই আমার চাওয়া, অন্য কারও গানে তাঁকে যেভাবে মডেল হিসেবে দেখা হবে, আমার গানের বেলায়ও সেভাবেই তাঁর পারফরম্যান্স বিচার করা হোক। দিন শেষে আমরা উভয়েই যেন যার যার কাজের মধ্য দিয়ে পরিচিতি তুলে ধরতে পারি। কারণ, আর যা কিছুই হোক সম্পর্ক দিয়ে কাজের মান বিচার চলে না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফস ন চ ধ র শ ফ ত ম র মন জ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা